নতুন ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ, পুরোনো ভবনেই চলছে সরকারি অফিসের কাজ

17 hours ago 11

পাবনার ঈশ্বরদীতে জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের তিনতলা বিশিষ্ট একটি নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এক বছরের মধ্যে এ ভবনের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তিন বছরে মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এদিকে, নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চরম অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হতে শুরু করেছে ভবনের নির্মাণসামগ্রী।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের(এলডিডিপি) তত্ত্বাবধানে ২০২২ সালের নভেম্বরে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ঈশ্বরদীর হাসপাতাল রোডে তিনতলা বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বার্ডস কনস্ট্রাকশন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে কাজ শেষ করে ভবনটি হস্তান্তর করার কথা থাকলেও তা করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ৩ বছরে কয়েক দফায় পঞ্চাশ শতাংশ কাজ শেষ হলেও বর্তমানে নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে ঈশ্বরদীর জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা গেছে, নতুন ভবন সম্পন্ন না হওয়ায় পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। নির্মাণাধীন নতুন ভবনের সামনে রড, ইট-বালি পড়ে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় ভবনের বিভিন্ন অংশ শেওলাতে ভরে গেছে। দেখে যেন মনে হচ্ছে কোনো পরিত্যাক্ত ভবন।

প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ে প্রভাব বিস্তার করে মেসার্স বার্ড কনস্ট্রাকশন দেশের বিভিন্ন স্থানে জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভবন নির্মাণের অনুমোদন লাভ করে। কিন্তু অধিকাংশ ভবনের কাজই শেষ করতে পারেনি তারা। মালামালসহ অন্য জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে বার বার কাজ বন্ধ রেখে সময় বাড়িয়েছে।

ঈশ্বরদী জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আদনান ইসলাম বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে এ ভবনের কাজ চলছে। অথচ এ ভবনের নির্মাণকালের সময় ধরা হয়েছিল এক বছর। বর্তমানে কাজ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন অংশে শেওলা পড়ে ভবনের গুনগত মান নষ্টের পথে। নির্মানকাজ বন্ধ রাখায় ভবনের ভিতর মাদকসেবীদের আড্ডা হয়। ঈশ্বরদী জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ভবনের কাজ বন্ধ রয়েছে এবং দীর্ঘ তিন বছর ধরে এ কাজ ঝুলে আছে। জানিনা ভবনের নির্মাণকাজ কেন বন্ধ রয়েছে। আমরা পুরাতন ভবনে অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। আমরা চাই নতুন ভবনের কাজটি দ্রুত শেষ হোক।

এ বিষয়ে বার্ড কন্সট্রাকশনের স্বত্তাধিকারী আবুল কাসেম সীমান্তের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে কোনো ফান্ড নেই। যার কারণে রাগ করে কাজ বন্ধ রেখেছি। সরকার ফান্ড না দিলে কি বাড়ির জমি বিক্রি করে এনে কাজ করে দেবো নাকি? তবে চেষ্টা করবো ফান্ড পেলে যত দ্রুত সম্ভব কাজটি শুরু করার।

এ ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের(এলডিডিপি) পরিচালক ডা. জসিমউদদীন বলেন, ভবনটির নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মানসম্পন্ন না হওয়ার কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও খুব বিব্রত। তবে চেষ্টা করছি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করার।

শেখ মহসীন/এএমএ

Read Entire Article