নয়াদিল্লিতে প্রথমবারের মতো ‘জামদানি প্রদর্শনী’

1 hour ago 6

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে ‘জামদানি প্রদর্শনী’। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে ন্যাশনাল ক্রাফটস মিউজিয়ামে পাঁচ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন এটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আয়োজনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় দর্শকদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বুননের অনন্য শৈলী ও সৌন্দর্য। এতে ভারতীয়রা কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে খ্যাতিমান এই বুননের সূক্ষ্ম কারুকাজ।

ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. রিয়াজ হামিদুল্লাহ জানিয়েছেন, হঠাৎ পাওয়া এক অনুপ্রেরণা থেকেই এই প্রদর্শনীর আয়োজন। তিনি বলেন, ‘এবারের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে আমরা কিছু জামদানি প্রদর্শন করেছিলাম। দর্শকদের অভাবনীয় সাড়া আমাদের এই প্রদর্শনীর পথ দেখায়। এর মাধ্যমে আরও মানুষ জামদানির শাশ্বত সৌন্দর্য আবিষ্কার করবে বলে আশা করি।’

প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন ভারতের খ্যাতিমান হস্তশিল্প ও টেক্সটাইল পুনরুজ্জীবন বিশেষজ্ঞ চন্দ্রশেখর ভেদা। এতে বাংলাদেশের দক্ষ কারিগরদের তৈরি সেরা জামদানির পাশাপাশি প্রদর্শিত হচ্ছে দু’টি বিরল ১৫০ বছরের পুরোনো জামদানি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চন্দ্রশেখর ভেদা বলেন, জামদানি যন্ত্রে তৈরি করা যায় না। এর স্বচ্ছতা আর কোমলতা যেন বাতাসে ভাসমান এক বুননের জাদু।

আয়োজনের সহ-কিউরেটর চন্দ্রশেখর সাহা বাংলাদেশের জামদানির ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, একসময় বাংলার মসলিন ছিল বিশ্বসেরা। জামদানি সেই একই আসনে অবস্থান করে। এটি এমন এক শিল্প, যা না দেখে আর না ছুঁয়ে বোঝা যায় না।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনরাও মতামত দেন। পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিজাইনার সুনীতা কোহলি জামদানিকে আখ্যা দেন ‘অমূল্য বিলাসিতা’ হিসেবে। তিনি বলেন, সম্রাটরা একে লালন করেছেন, ব্যবসায়ীরা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ছড়িয়েছেন, কবিরা চেষ্টা করেছেন এর সূক্ষ্মতা ধরতে। ইউনেসকো একে বলেছে অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। আমি বলি এটি অমূল্য বিলাসিতা, যা মাপা যায় না দামে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ডিজাইনার মুজাফ্‌ফর আলি বলেন, আলো আর বুননের খেলা, এ এক সৌন্দর্য, যা দুই জাতিকে একত্র করতে পারে শিল্পের প্রতি অভিন্ন ভালোবাসায়।

বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে দুই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত জামদানি তাঁতি মোহাম্মদ জামাল হোসেন ও মোহাম্মদ সাজীব। তারা প্রদর্শনীতে সরাসরি জামদানি বুননের জটিল প্রক্রিয়া দেখাচ্ছেন। আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিশ্বের নানা দেশের কূটনীতিক, শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও টেক্সটাইল অনুরাগীরা।

জেপিআই/এমএমকে/জেআইএম

Read Entire Article