নাটোরের গুরুদাসপুরে ফাঁকা গুলি বর্ষণসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত তিনদিনের হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। শহরে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মিছিল ও মোটরসাইকেল শোডাউন অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সরকারি অফিসগুলো খোলা থাকলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সময়মত অফিসে আসেননি। কেউ কেউ অফিস করলেও বেশিক্ষণ অবস্থান করেননি। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। ডাক্তারের চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি তারা।
এদিকে দুর্বৃত্তদের হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় গারিষাপাড়া মহল্লার আওয়ামী লীগ নেতা সাবলু মোল্লার বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার শব্দ শোনা যায়।
সাবলু মোল্লার স্ত্রী শাপলা বেগম গুলি বর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, দুর্বৃত্তরাই বরং হামলা চালিয়ে তার স্বামী ও ভাসুর বাবলু মোল্লাকে বেধড়ক পিটিয়েছেন। প্রাইভেট কারসহ বাড়ি ভাঙচুর করেছেন।
এছাড়া সাবেক এমপি কোহেলি কুদ্দুস মুক্তির চাচাতো ভাই শ্যামল প্রমাণিককে (৪৩) পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে প্রতিহিংসার শিকার অনেক ভুক্তভোগীরা তাদের বেদখল হয়ে যাওয়া জায়গা-সম্পত্তি নিজেদের দখলে নিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। অনেকে পাওনা টাকা উদ্ধারে আওয়ামী পণ্থিদের বাড়িতে হানা দিচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ধারাবারিষা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মাস্টারের বাড়ি ও অফিস এবং তার অনুসারী সাবেক ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলামসহ তার আশপাশের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আনন্দনগর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন দুর্বৃত্তরা।
এসব ঘটনায় গুরুদাসপুর থানা পুলিশের কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। তারা কর্মবিরতি পালন না করায় নো সার্ভিস সেবায় আছেন কিনা তা অনেকের বোধগম্য নয়।
তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন জানান, আমাদের থানা ও পুলিশ সদস্যরা সুরক্ষিত আছেন। তাদের আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অপরদিকে কোনো হামলা ও কারো জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না করে সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে এলাকায় মাইকিং করেছেন গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সভাপতি মো. মশিউর রহমান বাবলু।
রেজাউল করিম রেজা/আরএইচ/জিকেএস