নাফিস সরাফাতসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ১৬১৩ কোটি টাকার মামলা
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফাতসহ চারজনের বিরুদ্ধে ১৬১৩ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট গুলশান থানায় এ মামলা করে। শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, রেইস ম্যানেজমেন্ট পিএসিএল নামে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ফান্ডের অর্থ ব্যক্তিগত ও অবৈধ স্বার্থে ব্যবহার করেন চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও তার সহযোগীরা। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি গঠনের পর ২০১৩ সালের মধ্যেই ১০টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পায় এবং বর্তমানে ১৩টি ফান্ড পরিচালনা করছে। নাফিস সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও সহযোগী ড. হাসান তাহের ইমাম মিলে মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিনিয়োগ করে তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) শেয়ার কেনেন এবং পরবর্তীতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে জায়গা করে নেন। একইভাবে কৌশলে আঞ্জুমান আরা শহীদকে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদেও বসান নাফিস
পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফাতসহ চারজনের বিরুদ্ধে ১৬১৩ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট গুলশান থানায় এ মামলা করে।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, রেইস ম্যানেজমেন্ট পিএসিএল নামে একটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ফান্ডের অর্থ ব্যক্তিগত ও অবৈধ স্বার্থে ব্যবহার করেন চৌধুরী নাফিস সরাফাত ও তার সহযোগীরা। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি গঠনের পর ২০১৩ সালের মধ্যেই ১০টি মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পায় এবং বর্তমানে ১৩টি ফান্ড পরিচালনা করছে।
নাফিস সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও সহযোগী ড. হাসান তাহের ইমাম মিলে মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ বিনিয়োগ করে তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) শেয়ার কেনেন এবং পরবর্তীতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে জায়গা করে নেন। একইভাবে কৌশলে আঞ্জুমান আরা শহীদকে সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদেও বসান নাফিস সরাফাত।
অভিযুক্তরা মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ ব্যবহার করে মাল্টি সিকিউরিটিজ নামের একটি ব্রোকারেজ হাউসও অধিগ্রহণ করেন। ওই প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়া পদ্মা ব্যাংকের অর্থ ব্যবহার করে পদ্মা ব্যাংক সিকিউরিটিজ ও স্ট্র্যাটেজিক ইকুইটি ফান্ডেও বিনিয়োগের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংস্থা।
সিআইডির অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন ব্যাংকে নাফিস সরাফাত, তার স্ত্রী ও ছেলে রাহীব সাফওয়ান সারাফাত চৌধুরীর নামে মোট ৭৮টি ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়েছে। এসব হিসাবে প্রায় ১,৮০৯ কোটি টাকা জমা এবং ১,৮০৫ কোটি টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে এসব হিসাবে স্থিতি রয়েছে মাত্র ২৯.২১ লাখ টাকা।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, এছাড়া বিদেশে কানাডা, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে নাফিস সরাফাত পরিবার ও সহযোগীদের নামে বিপুল সম্পদ, ব্যাংক হিসাব ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু রাহীব সাফওয়ান সারাফাত চৌধুরীর নামেই বিদেশি ব্যাংকে ৭৬টি হিসাব পরিচালনার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
নাফিস সরাফাত ও তার সহযোগীদের নামে দুবাইতে ফ্ল্যাট-ভিলা, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে নিবন্ধিত একাধিক কোম্পানি এবং সিঙ্গাপুরে বিভিন্ন ফান্ড পরিচালনার প্রমাণ। বাংলাদেশেও তাদের নামে বিপুল অস্থাবর–স্থাবর সম্পদের তথ্য মিলেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বেস্ট হোল্ডিংসের বন্ডে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে চাপ প্রয়োগ, বিদেশে অর্থ পাচার, বাড়ি–ফ্ল্যাট ক্রয়সহ নানা অভিযোগ প্রকাশের পর সিআইডি এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
সিআইডি বলছে, প্রতারণা, জালিয়াতি এবং দেশি-বিদেশি মুদ্রা পাচারের মাধ্যমে মোট ১৬১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার বেশি অর্থ অবৈধভাবে অর্জিত হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই চারজনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রাষ্ট্রের আর্থিক স্বার্থ রক্ষায় মানিলন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান।
টিটি/এসএনআর/এমএস
What's Your Reaction?