কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, জসিম উদ্দিন তার শিক্ষকতাকালীন বিভিন্ন শিক্ষার্থীর ধর্মীয় আচরণকে কটাক্ষ্য করেন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানেন। বিশেষ করে পর্দানশীন শিক্ষার্থীরা বরবারই তার রোষাণলে পড়েছে। পর্দানশীন ছাত্রীদের জোর করে নেকাব খোলানো, পর্দা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, জঙ্গী ট্যাগ দেওয়া, ভাইভার মধ্যে নেকাব খুলতে বাধ্য করা, খুলতে না চাইলে মৌখিক হেনস্থা ও পরীক্ষায় নাম্বার কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মানসিক নির্যাতন ও ব্যাক্তিগত স্বাধীনতায় আঘাত হেনেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের তিনি যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য করেছেন। সদাচরণবহির্ভূত মন্তব্য শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রস্তুতসুলভ ও অপমানজনক। তার এমন বৈষম্যমূলক আচরণে বহু শিক্ষার্থীর অ্যাকাডেমিক ও ক্যারিয়ারে বিরুপ প্রভাব পড়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী সাবেক শিক্ষার্থী তাসনিয়া জাহান আনিকা বলেন, আমরা গত এক যুগেরও বেশি সময় অনেকভাবে হয়রানি হয়েছি ও বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আমরা চাই না আমাদের আর কোনো অনুজ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হোক বা নির্যাতিত হোক। এটা নিয়ে আগেও অনেক নিউজ হয়েছে, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে কিন্তু কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। বর্তমান প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি হলো এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচার দেওয়া।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যৌন হয়রানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আমি আঘাত হানতে পারি না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, আমি এখনো অভিযোগ পত্র পাইনি। পেলে এ বিষয়ে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তবে এসব বিষয়ে প্রশাসন সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। পূর্বে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে যা নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, পূর্বেও মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, পরিক্ষার মার্ক টেম্পারিং, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ এনেছিলো শিক্ষার্থীরা। যার তদন্ত এখনো চলছে।