নারীর শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য যৌন হয়রানির শামিল : কেরালা হাইকোর্ট

17 hours ago 2
নারীর শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করাও যৌন হয়রানির অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছেন ভারতের কেরালা হাইকোর্ট। এই রায় নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সোমবার (০৬ জানুয়ারি) কেরালা হাইকোর্টের বিচারক এ. বদরুদ্দীন এ রায় দেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, কোনো নারীর ‘শারীরিক গঠন’ নিয়ে মন্তব্য যৌন হয়রানির অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কী ঘটেছিল?  প্রতিবেদনে বলা হয়, কেরালা স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের এক পুরুষ কর্মচারীর বিরুদ্ধে তার নারী সহকর্মী অভিযোগ করেন, ২০১৩ সাল থেকে তিনি নিয়মিত অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছেন। ২০১৬-১৭ সাল থেকে অভিযুক্ত তাকে অশালীন বার্তা পাঠানো এবং ফোনকল করা শুরু করেন। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি কর্মস্থল এবং পুলিশের কাছে জানালেও অভিযুক্ত ব্যক্তি তার কার্যক্রম বন্ধ করেননি। অভিযুক্তের বক্তব্য  যখন এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়, তখন অভিযুক্ত ব্যক্তি হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলাটি খারিজ করার জন্য। তিনি দাবি করেন, কোনো নারীর শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করা যৌন হয়রানির শামিল নয় এবং এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। ভুক্তভোগীর অভিযোগ  মামলায় ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে টানা কয়েক বছর ধরে হয়রানি করেছেন। তিনি কেবল মন্তব্য করেই থেমে থাকেননি, বরং ফোনকল এবং বার্তার মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত জীবনে বারবার হস্তক্ষেপ করেছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ  মামলার বিষয় আদালত পর্যবেক্ষণের পর বিচারক বলেন, অভিযুক্তের এই আচরণ প্রাথমিকভাবে যৌন হয়রানির শামিল। রায়ে উল্লেখ করা হয়, নারীর শারীরিক গঠন নিয়ে মন্তব্য করাও শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাত করার শামিল, যা সমাজে নারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। আদালতের রায়  কেরালা হাইকোর্টের বিচারক এ বদরুদ্দীন তার রায়ে বলেন, নারীর শারীরিক গঠন নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে। এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪(এ) ও ৫০৯ ধারার পাশাপাশি কেরালা পুলিশ আইনের ১২০(ও) ধারার আওতায় অপরাধ। বিচারক আরও বলেন, এমন মন্তব্য একজন নারীর সম্মান ও মর্যাদা লঙ্ঘন করে। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। রায় নিয়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কেরালা হাইকোর্টের এই রায় নারীদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি সমাজে নারীর মর্যাদা রক্ষা এবং হয়রানির বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা পৌঁছে দেবে।
Read Entire Article