ফরিদপুরে ভাঙ্গার উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে থানাসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এটি নিয়ে এ ঘটনায় থানায় মোট তিনটি মামলা হলো।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মামলাটি ভাঙ্গা থানায় নথিভুক্ত করা হয়। ভাঙ্গা উপজেলার সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর সৌমেন্দ্র নাথ সরকার বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গা থানা ও ১৮ সেপ্টেম্বর ভাঙ্গার হাইওয়ে থানা মামলা করে।
উপজেলা প্রশাসনের মামলায় ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীকে এক নম্বর আসামি করে ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোকন মিয়াকে (৫০) দুই নম্বর আসামি ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চর দত্তপাড়া মহল্লার মনির চৌধুরীকে (৫২) তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর হামলা-ভাঙচুরের পাশাপাশি সম্পদ লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় মোট ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে অন্তত এক কোটি টাকা। এছাড়া হামলাকারীরা বিভিন্ন রেজিস্টার ও নথিপত্র, কম্পিউটার সামগ্রীসহ মোটরসাইকেল উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংসদীয় ক্ষমতা আইন নির্বাচনের পুনঃনির্ধারিত সীমানা চূড়ান্ত করা হয় যেখানে ফরিদপুর-৪ আসনের অন্তর্ভুক্ত ভাঙ্গা উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা থেকে দুটি ইউনিয়ন (আলগী ও হামিরদী) বিযুক্ত হয়ে ফরিদপুর-২ (সালথা ও নগরকান্দা) এর সঙ্গে যুক্ত হয়। যার ফলশ্রুতিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ভাঙ্গা উপজেলার জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে ভাঙ্গা গোল চত্বরের সঙ্গে সংযুক্ত জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ চারটি মহাসড়ক বন্ধ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিক্ষুব্ধ জনতা গত ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে ভাঙ্গা উপজেলার চারটি মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রসহ ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ কমপাউন্ডে এসে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে মারাত্মক ত্রাসের সৃষ্টি করে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, এ মামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ জোরালোভাবে অভিযান শুরু করেছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন এক প্রজ্ঞাপনে ফরিদপুর-৪ আসনের অধীন ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে নগরকান্দা ও সালথা যুক্ত করে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে সমন্বয় করে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ভাঙ্গায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ এতে যোগ দেন। সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাচন অফিস, ভাঙ্গা থানা, হাইওয়ে পুলিশের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এন কে বি নয়ন/এমএন/জেআইএম