বেশ কয়েক মাস ধরে নিখোঁজ থাকা মার্কিন নাগরিক ট্র্যাভিস পিট টিমারম্যানের সন্ধান মিলেছে। তাকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের একটি আটক কেন্দ্র (ডিটেনশন সেন্টার) থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
দেশটিতে বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর ওই আটক কেন্দ্রে প্রবেশ করেন বিদ্রোহীরা। সেখানে আসাদবিরোধীদের আটকে রেখে দিনের পর দিন নির্যাতন করা হতো। গুমের কাজেও কেন্দ্রগুলো ব্যবহার করা হতো। এমনকি হত্যা এবং লাশ নিশ্চিহ্ন করতে কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ টিম ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশিরা এসব আটক কেন্দ্রকে ‘আয়নাঘর’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।
বিদ্রোহীরা আটক কেন্দ্রের সব বন্দীকে মুক্তি দেন। তাদের সঙ্গে মুক্তি পান ট্র্যাভিস পিট টিমারম্যান। মুক্তির পর বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে আনাদোলু এজেন্সি তার সঙ্গে দেখা করে। ওই সময় তোলা কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থাটি।
টিমারম্যান আনাদোলুকে বলেছেন, সাত মাস আগে তিনি লেবানন ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী পাহাড়ে থাকাকালীন সিরিয়ার সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে মক্কায় হজ বা তীর্থযাত্রা করতে গিয়েছিলেন। মার্চ মাসে ইউরোপে গিয়েছিলেন এবং সিরিয়ায় প্রবেশের আগে মে মাসে পূর্ব লেবাননে ভ্রমণ করেন তিনি। তাই তার প্রতি আসাদ বাহিনীর সন্দেহ ছিল চরমে।
প্রসঙ্গত, বিদ্রোহীদের ঝটিকা অভিযানে সিরিয়ার স্বৈরাশাসক বাশার আল আসাদের পতন হয়েছে। তার পতনের পর দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশটির পরিস্থিতি। এখনও নতুন সরকার গঠন না হলেও দেশটির প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বিদ্রোহীদের জোটের প্রধান শরিক হায়াত তাহরির আল–শামের (এইচটিএস) হাতে।
এ গোষ্ঠীটির প্রধান আহমেদ আল-শারা (তিনি আল-জুলানি নামেও পরিচিত) একটি বিবৃতি জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধে জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ সরকারের সিনিয়র সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি যারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন তাদেরও ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
জুলানি বলেন, সিরিয়ার জনগণকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত অপরাধী, খুনি নিরাপত্তা এবং সেনা কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে দ্বিধা করব না। ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িতদের তথ্য দিন। যারা অপরাধীদের ধরতে তথ্য দেবেন তাদের পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, যারা বাধ্যতামূলক চাকরিতে ছিলেন এবং যাদের হাত সিরিয়ার জনগণের রক্তে রঞ্জিত নয়; তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাবটি বহাল রয়েছে।