নির্বাচনকে ঘিরে কিছু মহল ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে : সেলিমা রহমান

6 hours ago 6
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, আগামীর নির্বাচনকে ঘিরে কিছু মহল ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। নির্বাচন হবে, তবে নির্বাচনের আগে সংস্কার ও গণভোট ইস্যুতে কিছুটা ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে। আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতির প্রভাব যেন নির্বাচনে না পড়ে।  তিনি বলেন, আমরা একটি নির্বাচনমুখী দল। তবে বিভিন্ন বিষয়ে যে ষড়যন্ত্র চলছে, সেটি আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরছি। নির্বাচনের আগে কিছু সংকট সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি অভিজাত কনভেনশন হলে সমাজে নারী ও শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠা বিএনপির নির্বাচনী অগ্রাধিকার শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। সেলিমা রহমান বলেন, গ্রামের নারীরা অত্যন্ত সরল সহজ, এ সুযোগ নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল ধর্মকে ব্যবহার করে জান্নাতের টিকিট দেওয়ার নামে নারীদের বিভ্রান্ত করছে। আমরা প্রত্যেকে ধার্মিক, কিন্তু ধর্ম নিয়ে যে রাজনীতি হয় না এটি সবাইকে বুঝাতে হবে। প্রান্তিক এলাকার নারী জনপ্রতিনিধিরাই আমাদের নির্বাচনের অন্যতম চালিকাশক্তি। আপনারাই নিজ এলাকার সব কিছু জানেন। আপনাদের সঙ্গে জনগণের সংশ্লিষ্টতা আছে। আপনারাই তৃণমূলের নারীদের সঙ্গে মূল সেতুবন্ধ।  তিনি আরও বলেন, গ্রামের নারীরা খুবই সরল সহজ, তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ধানের শীষকে ভালোবাসেন। গ্রামের নারীরাই নেত্রীর জন্য নামাজ পড়ে, রোজা রেখে দোয়া করেছেন, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রার্থনা করেছেন। বেগম খালেদা জিয়া এত নির্যাতনের পরও দেশ ছেড়ে কোথাও পালিয়ে যাননি। তিনি দেশের মানুষকে ভালোবাসেন। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচিতে সব রকম সংস্কারের কথা সবার অধিকারের কথা রয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নারী ক্ষমতায়নের বীজ বপন করেছিলেন। তিনি যৌতুকবিরোধী আইন করেছেন, কর্মক্ষেত্রসহ সর্বক্ষেত্রে নারীদের কোটা তৈরি করেছিলেন। নারীদের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মেয়েদের কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। নারীরাই একটি পরিবারের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি।  তিনি বলেন, আপনারা যখন ঘরে ঘরে যাবেন, নারীদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিএনপি নারীদের জন্য যা যা করছে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। তাই আমাদের প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় টিম গঠন করে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা জোরদার করতে হবে। সিলেটবাসীর প্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলী ও ইফতেখার আহমদ দিনারকে গুম করা হয়েছে। তারা দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে ছিল। ঐকমত্য প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বেগম সেলিমা রহমান বলেন, যারা ঐকমত্যের নামে বসেছেন, তারা গুণিজন হলেও এ দেশের কেউ নন। এ দেশের সংবিধান সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই। ঐকমত্যের বিষয়টি নিয়ে সরকার পুরো জাতির সঙ্গে খেলা করছে। সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গুম কমিশনের কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না। যেসব পরিবারের সদস্যরা গুম হয়েছেন, তারা সবাই অভিযোগ দিয়েছেন। যদি কমিশন সঠিকভাবে কাজ করত, তবে আমাদের নেতাকর্মীদের গুমের বিষয়ে কোনো না কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেত। নির্বাচনে বিএনপির আসন বণ্টন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বেশ কিছু আসন এখনো শূন্য রয়েছে। ওই আসনগুলো চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারছি না। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউস, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, কলিম উদ্দিন মিলন, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ সভায় সিলেট জেলা ও মহানগর, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলার সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Read Entire Article