লক্ষ্মীপুরে ওয়ে হাউজিং কোম্পানির নিয়মবহির্ভূত বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দেবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া দুটি দোকান ও একটি কবরস্থান ভেঙে গেছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের ভবনগুলো। এ ঘটনায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাখারিপাড়া সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, ভেঙে যাওয়া দোকানগুলোর পেছনে একটি পুকুর রয়েছে। হাউজিংয়ের অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণে মাটির তলদেশ পানির স্তর সৃষ্টি হয়। ভেকু দিয়ে সম্প্রতি প্রায় ৩০ ফুট মাটি খুড়ে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছিল হাউজিং কোম্পানি। এতে পানি নির্মাণাধীন এলাকায় ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে পানির চাপ বেড়ে রাস্তা দেবে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পাশের দুটি দোকান ভেঙে গেছে। ফাটলসহ আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক শাহিন কাদির রিপন বলেন, অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণেই মাটি সরে গিয়ে আমার দুটি দোকান ভেঙে গেছে। এতে আমার অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় ভবন মালিক শামছুল আলম বলেন, নিয়মবহির্ভূত পাইলিংয়ের কারণেই সড়ক দেবে গেছে। পাশে দুটি দোকান ভেঙে গেছে। আমার ভবনটি এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয় ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, লাইনে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামী রোববার কুমিল্লা থেকে লোকজন এসে কাজ করবে। কাজ শেষে গ্যাস সংযোগ চালু হবে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল বলেন, ওয়ে হাউজিংকে ৭ তলা ভবনের অনুমতি দিয়েছি। তারা ১০ তলা ভবনের অনুমতি নিয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। পাইলিং নিয়ম অনুযায়ী চলছিল। কিন্তু পাশে পুকুর থাকায় মাটির নিচ দিয়ে পানির স্তর পেয়ে যায়। যার কারণে সড়কটি দেবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে সড়ক আর ড্রেনের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আপাতত তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ ও সড়ক সংস্কার শেষ হলেই কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। আপাতত সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
ওয়ে হাউজিংয়ের এজিএম হাসান আহমেদ বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছি। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। আমরা ভবনটি ১০ তলা করব। পৌরসভা থেকে ৭ তলার অনুমোদন রয়েছে। আপাতত ওই ৭ তলা ভবনই হবে। সড়ক ও দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেব। সড়কের যেন বেশি ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা ইতোমধ্যে মাটি ফেলে ব্যবস্থা নিয়েছি।
জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, দুর্ঘটনার খবরটি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।