নেসকোতে গোপনে ৩১ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ!

3 months ago 65

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানিতে (নেসকো) ৩১ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ম ভেঙে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশসহ যেসব নিয়ম মানার কথা সেগুলো না মেনে গোপনে এসব নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান দল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি পরিচালনা পর্ষদের ১০৪তম সভায় ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নেসকোর বিধিমালা অনুযায়ী এসব নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয় একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া বাধ্যতামূলক। একই পদে অন্তত কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বীও থাকতে হবে। নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা গ্রহণও বাধ্যতামূলক। তবে এসব শর্তের কোনোটিই মানা হয়নি এই ৩১ নিয়োগের ক্ষেত্রে। এমনকি মৌখিক পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। কোনো ধরনের পরীক্ষা ও বিজ্ঞাপন প্রচার ছাড়াই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এসব নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রথমে অস্থায়ীভাবে নেসকোতে যুক্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে গোপনীয়ভাবে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছে দুদক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিরুল ইসলাম ও তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) সৈয়দ গোলাম আহাম্মদ মিলে এই নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, নেসকোর বিধিমালা ও সরকারি চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ নিয়েছেন। ঘুস বাণিজ্য করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ব্যক্তিগতভাবে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এ নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি নেসকোকে এসব নিয়োগের ও ১০৪তম সভার রেকর্ডপত্র ২৬ জানুয়ারি সরবরাহ করার জন্য বলা হয় দুদকের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দপ্তরের সহকারী ব্যবস্থাপক সাদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘আপনি কেন আমাকে এসব প্রশ্ন করছেন?’

পরীক্ষা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বলেন, বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ না হলে কীভাবে হয়েছে? তবে কোন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।

জুনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক (এইচআর) পদে নিয়োগ পেয়েছেন জামিউল ইসলাম। তিনি বলেন, কোনো বিজ্ঞাপ্তি ও পরীক্ষা হয়েছে কি না এগুলো প্রশাসনিক প্রশ্ন। এগুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারাই বলতে পারবেন।

নেসকোর পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল বগুড়ার সহকারী প্রকৌশলী সালমান শিহাব নিয়োগ পেয়েছেন এই ৩১ জনের মধ্যেই। তার কাছে নিয়োগ পরীক্ষা ও বিজ্ঞপ্তির কথা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না।’

এ বিষয়ে জানতে নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) সৈয়দ গোলাম আহাম্মদের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার দপ্তরে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো মেলেনি।

তবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। এই বিষয়ে একটি কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে এই নিয়োগের বিষয়ে কথা বলা যাবে, এখন নয়।

দুদকের সহকারী পরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত-১) আশিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কমিশনকে আপডেট জানানো হবে। কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্তাধীন বিষয়ে এর বেশি কিছু বলতে চাননি দুদকের এ কর্মকর্তা।

সাখাওয়াত হোসেন/এসআর/এএসএম

Read Entire Article