প্রয়াত স্বামী শিল্পপতি হাসান আহমেদের সম্পত্তি থেকে তার পরিবারকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র, মিথ্যা মামলা এবং হয়রানি থেকে রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী নারী জান্নাতুল ফেরদৌস।
জান্নাতুল ফেরদৌস পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হাসান আহমেদের স্ত্রী।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল ফেরদৌস অভিযোগ করে বলেন, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে আসামি কবির আহমেদ, বিদ্যুৎ ঘোষ, মুসা আহমেদ এবং তাদের সহযোগীরা আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে।
জান্নাতুলের স্বামী হাসান আহমেদ বাংলাদেশের বীমা খাত ও ব্যবসায়িক জগতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং পিপলস ইন্স্যুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি তিনি একজন জুট মিল ব্যবসায়ী ছিলেন এবং জুট রপ্তানির মাধ্যমে দেশের জন্য বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতেন। তবে ২০২০ সালে স্ট্রোকের কারণে হাসান আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তখন থেকেই তার সহকর্মী বিদ্যুৎ ঘোষ এবং তার ভাই কবির আহমেদ হাসান আহমেদের সম্পত্তি আত্মসাতের ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
হাসান আহমেদের অসুস্থতার সময় বিদ্যুৎ ঘোষ তার অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ফাইল সরিয়ে নেন। এ নিয়ে হাসান আহমেদ মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর ১৩৪) করেন। বিদ্যুৎ ঘোষ ও কবির আহমেদের নেতৃত্বে তাকে তার ব্যক্তিগত অফিস এবং পৈত্রিক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।
জান্নাতুল ফেরদৌস আরও বলেন, ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি হাসান আহমেদ প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুর পর বিদ্যুৎ ঘোষ, কবির আহমেদ এবং তাদের সহযোগীরা জান্নাতুলের নামে একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করে, যা পরে পল্টন থানার পুলিশ মিথ্যা প্রমাণ করে। তবে বিদ্যুৎ ঘোষ এবং তার সহযোগীরা ডিবি হারুনের মাধ্যমে পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে জান্নাতুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। এরমধ্যে বিদ্যুৎ ঘোষকে মুসা আহমেদ বেইলি রোডে তিন কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট উপহার দেন।
তিনি আরও অভিযোগ করে জানান, বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের শরণাপন্ন হন তিনি, কিন্তু কোনো সহায়তা পাননি। শেষ পর্যন্ত গেল বছরের ৩ জুলাই তিনি বিদ্যুৎ ঘোষের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা (মামলা নম্বর ২) করেন। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে সম্পত্তি ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেন, যা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আগামী ১৫ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলার ডিসচার্জ শুনানি হবে। এ বিষয়ে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তার পরিবারকে এ মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ঘোষ ও সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার দাবিও জানান এ ভুক্তভোগী নারী।
টিটি/এমএএইচ/জিকেএস