পদ্মার পানি বেড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এতে শত শত বিঘা আউশ ধান নষ্ট হচ্ছে। এসব জমিতে ধানের শীষ ফুটেছে মাত্র। কিন্তু ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের কেটে ফেলতে হচ্ছে ধানগাছ। বাধ্য হয়ে এসব ধান কেটে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। ফলে চাষের খরচ উঠাতো দূরের কথা। উল্টো লোকসানের বোঝা বইতে হচ্ছে কৃষকদের কাঁধে।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার আলাতুলি, নারাণপুর, দুর্লভপুর ও পাকা ইউনিয়ন ঘুরে এমন চিত্র দেখা দেছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, তিনবিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করছিলাম। শীষ উঠেছে মাত্র। এর মধ্যে পদ্মার পানি বেড়ে সব জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হওয়ার আগে কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছি। কিন্তু এতে কোনো লাভ নেই। এ তিনবিঘা জমিতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় লাখ টাকা। এখন আমি এ টাকা কোথায় পাবো?
আরেক কৃষক শামসুল আলম বলেন, প্রতিবিঘা জমিতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধান ফললে খরচ উঠে যেতো। কিন্তু এখন সব শেষ। গরুর খাবার দিয়ে শেষ করছি। ঋণ শোধ করব কেমনে সেটি ভেবে পাচ্ছি না। স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ করেছি।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মার উজানের ঢল প্রতিবছর ফসলি জমি তলিয়ে দেয়। কিন্তু এবার ধান পাকার আগে পানি বাড়ায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হয়েছে। বিশেষ করে সদরের সুন্দরপুর, আলীনগর, শাজাহানপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আলী হাসান নামের এক কৃষক বলেন, ধান ছিল পরিবারের ভরসা। এবার সব শেষ হয়ে গেল। এখন ধারকর্জ করে সংসার চালাতে হবে। বাড়ি ঘরও পানিবন্দি। এখন আমরা কোথায় যাব কী খাব বুঝে উঠতে পারছি না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. ইয়াছিন আলী বলেন, উজানের ঢলে কয়েকটি ইউনিয়নের ২ হাজার ২৫২ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। শত শত বিঘা আউশ ধান নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা হচ্ছে। সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সোহান মাহমুদ/আরএইচ/জিকেএস