ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াত ও রাত্রিযাপন পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করার দাবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার পল্টনস্থ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)-এর মিলনায়তনে এ সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের প্রচার সম্পাদক ইমরানুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশি।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় জনগণ, দিনমজুর, কুলি, শ্রমিক, মৎসজীবী, চাকরিজীবী, তরুণ উদ্যোক্তা, পর্যটন ব্যবসায়ী, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী, হোটেল-রিসোর্ট মালিকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সরকার সেন্টমার্টিন ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা এবং রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এরফলে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এখানে আর্থিক সংকট ও অভাব দেখা দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়ালেখা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অসংখ্য চাকরিজীবী বেকার হয়ে পড়েছে। উদ্যোক্তারা পথে বসে গেছে। হোটেল-রিসোর্ট মালিকদের বিনিয়োগ হুমকির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় জনজীবনের ব্যাপক ক্ষতি ও মানবিক সংকটের কথা বিবেচনায় ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
সভায় সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবছর ০১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটন যাতায়াত করে থাকে, কিন্তু এ বছর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের থেকে পর্যটন সীমিতকরণের আদেশ জারি করে।
আদেশে বলা হয়- নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবে কিন্তু রাত্রিযাপন করতে পারবে না। ডিসেম্বর ২০২৪ ও জানুয়ারি ২০২৫ সালে ২০০০ পর্যটক যেতে পারবে ও রাত্রিযাপন করতে পারবে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না কিন্তু যথাযথ সময়ে জাহাজ চলাচলের অনুমতি না পাওয়াতে নভেম্বর ২০২৪ সালে একজন পর্যটকও সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি।
পহেলা ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি হলেও ট্রাভেল পাস সংগ্রহের আতঙ্কে পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেননি। যার কারণে শতভাগ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল সেন্টমার্টিনবাসী এবং পর্যটন ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। ২ মাসের আয় দিয়ে সেন্টমার্টিনবাসীর ১২ মাস চলা সম্ভব নয়। মানবিক বিবেচনায় পর্যটকদের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
মতবিনিময় সভায় ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর নেতারা, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের নেতারা, সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের নেতারা, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা, সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতির নেতারা, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন, ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ট্যাব)-এর নেতারা, সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতির নেতারা, বোট মালিক সমবায় সমিতির নেতারা, মৎসজীবী মালিক সমিতির নেতারা, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতির নেতারা, জাহাজ মালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব)-এর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে নেতারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।