পর্যটকে টইটম্বুর কুয়াকাটার সৈকত

3 hours ago 5

শীত মৌসুম যায় যায় এমন মুহূর্তে সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটার সৈকত পর্যটকে টইটম্বুর হয়ে উঠছে। যারা অগ্রিম বুকিং না করে কুয়াকাটায় বেড়াতে যাচ্ছেন তারা পড়ছেন আবাসিক সংকটে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মোতাল শরীফ জানান, গত দুই সপ্তাহে তেমন পর্যটকের চাপ না থাকায়, এ সপ্তাহে পর্যটকদের এ চাপ দেখা গেছে।

তিনি বলেন, শীতের মৌসুমের শুরুতে তেমন পর্যটকের আনাগোনা ছিল না। এ সপ্তাহের শুরুর সাপ্তাহিক ছুটিতে বেশ পর্যটকদের দেখা মিলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই কুয়াকাটার সব আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট শতভাগ রিজার্ভ হয়ে গেছে। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করছি।

সরেজমিনে সৈকতে গেলে দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্ব ও পশ্চিমে এক কিমি জায়গাজুড়ে হাজার হাজার পর্যটকের ঢল নামে। যে যার মতো করে ছবি ধারণ করে এবং বালিয়াড়িতে হাঁটাহাঁটি করে সময় পার করছেন। আগত পর্যটক দর্শনার্থীরা কুয়াকাটার কুয়া, শ্রীমঙ্গল এবং সীমা বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন মহিলা মার্কেট, ঝিনুক-আচার মার্কেট, শুঁটকি মার্কেটে কেনাকাটাসহ নৌপথে বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়িয়েছেন। অন্যদিকে পর্যটনমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। 

হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসজুড়ে পুরো আবাসিক হোটেলে ৫০ শতাংশ রিজার্ভড ছিল। সে হিসেবে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই পর্যটকদের আনাগোনায় শতভাগ রিজার্ভড হয়ে গেছে। আশা করি সামনের দিনগুলোতে এমন ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

সমুদ্র বাড়ি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মো. সজিব বলেন, আমাদের আবাসিক হোটেলটি শতভাগ রিজার্ভ হয়েছে। রুম খালি না থাকায় পর্যটকদের রুম পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। 

ঢাকা থেকে আগত পর্যটক আ. হামিদ বলেন, কুয়াকাটার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নিরিবিলি পরিবেশ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এখানকার সৈকতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে আসা সার্থক মনে হচ্ছে। তবে, পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীর সেবার মান বাড়াতে হবে। সৈকতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হবে। পর্যটকরা হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এ বিষয়ে ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সভাপতি কেএম বাচ্চু বলেন, পর্যটক আগমন করায় আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। পর্যটক আগমনের ধারাবাহিকতা বজায় না থাকলে আমরা আবারও ক্ষতির মুখে পড়ব।

শুঁটকি ব্যবসায়ী রুবেল জানান, আজ পর্যটকদের মধ্যে বেশিরভাগই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিক্রিবাট্টা বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। 

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, শীতের প্রকোপ কমে যাওয়ায় কুয়াকাটায়  সাপ্তাহিক ছুটিতে আশার আলো দেখতে শুরু করছে। হয়তো মাসখানেক পর্যটকদের আনাগোনা থাকবে, তারপর আবার কমতে শুরু করবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশসহ গোয়েন্দা নজরদারি আছে। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তায় দিন-রাত নিরলস কাজ করছি। স্থানীয়দের সহযোগিতার মাধ্যমে টুরিস্ট পুলিশ আগামী দিনগুলোতে পর্যটকদের সেবার মানোন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

Read Entire Article