রাজধানীর মিরপুরে কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের মরদেহ পাঁচদিন হাসপাতাল মর্গে থাকার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
রোববার (১৯ অক্টোবর) রাত সোয়া ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ থেকে মরদেহগুলো হস্তান্তর শুরু হয়, যা শেষ হয় রাত পৌনে ১টার দিকে।
মরদেহ হস্তান্তর করা ১৬ জন হলেন—বরগুনার বামনা উপজেলার মৃত ওমর ফারুকের মেয়ে মাহিরা আক্তার (১৪), ভোলার লালমোহন উপজেলার দলিগর নগর গ্রামের ওয়াজি উল্লাহর মেয়ে নার্গিস আক্তার (১৮), শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মিজানুর রহমানের সন্তান ছানোয়ার হোসেন (২৫), গাইবান্ধা সদর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের সন্তান নূরে আলম সরকার (২৩), বরগুনার আমতলী উপজেলার দাড়িকাটা গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের সন্তান আল মামুন (৩৮), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর থানার তিলকনগর গ্রামের নজু মিয়ার সন্তান রবিউল ইসলাম রবিন (২০), সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোল্লা রাজাপুর গ্রামের রতন মিয়ার মেয়ে ফারজানা আক্তার (১৫), বরগুনা সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে খালিদ হাসান সাব্বির (২৯), নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে আব্দুল আলিম (১৪), নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার নুরুল্লা গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে জয় মিয়া (২০), নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সাউথখালী গ্রামের নয়ন মিয়ার মেয়ে আসমা আক্তার (১৩), নেত্রকোনার মদন উপজেলার কদমশ্রী গ্রামের সনু মিয়ার মেয়ে মুনা আক্তার সামিয়া (১৬), লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম নওদাবাস গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে মৌসুমী খাতুন (২২), শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর গ্রামের মুছা দেওয়ানের মেয়ে মুক্তা বেগম (৩৬), নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার জয়পুর গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে তোফায়েল আহমেদ (১৮) ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের নাজমুল ইসলাম রিয়াজ (৪০)।
আরও পড়ুন
নিহতের পরিবারকে ২ লাখ, আহতদের ৫০ হাজার টাকা সহায়তা
এক আগুনেই গেলো ১৬ প্রাণ, কবে টনক নড়বে কর্তৃপক্ষের?
রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বলেছেন, রাতে মালিবাগ সিআইডি ফরেনসিক থেকে ১৬ জনের মরদেহের ডিএনএ নমুনা আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে আমরা নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের খবর দিই। এ পর্যন্ত ১৬টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যপস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে মরদেহের দাফন-কাফন ও যাতায়াত বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেলের জাকির হোসেন।
গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। গুদামে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন রাতে মরদেহগুলো ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পরদিন ১৫ অক্টোবর ৬টি এবং ১৬ অক্টোবর ১০টি মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
কাজী আল-আমিন/এমকেআর