সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে খুলনার পাইকগাছায় ১৫টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে পুরোদমে। কর্তৃপক্ষের নেই কোনো নজরদারি। ভাটা মালিক বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে মিথুন জানান, কিছু জরিমানার টাকা দিলেই আর কোনো সমস্যা থাকে না। এ কারণে সে টাকা আগে থেকেই রেডি করে ভাটার কাজ শুরু করি।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী আদালতের উদ্যোগে প্রতি বছর ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়। তাতে ভাটা মালিকরা খুশি, এদিয়েই বৈধতা পাচ্ছে।
এসব ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, কৃষিজমি ও নদী থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। কোনো কোনো ভাটা মালিকের সঙ্গে কথা হলে জানান, ‘জরিমানার টাকা দিলেই সবকিছুই বৈধ’। উপজেলার চাঁদখালী, গদাইপুর, রাডুলী ও হরিঢালীতে ১৫টি ইটভাটা কৃষিজমিতে অবস্থিত, প্রায় সবগুলোই জনবসতি এলাকা প্রতিষ্ঠিত।
নিষিদ্ধ জায়গা যেমন- কৃষিজমি, নদীর চর থেকে কাটা হচ্ছে মাটি। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভাটায় বসানো হয়েছে করাত কল। বেশিরভাগ ভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স। এদিকে ধোঁয়ার কুণ্ডুলিতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।
পরিবেশ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে ও বনাঞ্চল থেকে ২ কিলোমিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপনের কথা। কিন্তু এসব নীতিমালা সর্বক্ষেত্রে উপেক্ষিত। প্রায় প্রত্যেকটি ইটের ভাটার পাশে সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, হাট-বাজার ও ব্যস্ততম সড়ক অবস্থিত।
পাইগাছায় স্থাপিত ভাটাগুলো হলো- হরিঢালীর মাহবুবুর রহমান রঞ্জুর দুটি ভাটা। যমুনা ব্রিকস ১ ও ২, গদাইপুর মুজিবুর রহমানদেরন যৌথ ফাইভ স্টার, ফতেমা রহমানের এফএফবি, চাঁদখালীর নাজমুল হুদা মিথুনের এসএমবি, মহিউদ্দিন খানের বিএকে, বাদশা খানের খান ব্রিকস, মুনছুর গাজীর এস এম ব্রিকস, আব্দুল হালিমের স্টার ব্রিকস, আব্দুল মান্নান গাজীর বিবিএম ব্রিকস, আব্দুল জলিলের এডিবি ব্রিকস, শহাজাদা ইলিয়াসের এমএসবি ব্রিকস, সিরাজুল ইসলামের এসবিএম ব্রিকস, শফিকুল ইসলামের এমবিএম ব্রিকস, রাডুলী ইউনিয়নের সীমান্তে মিনারুল ইসলাম ও ডালিম সরদারের ইটের ভাটা।
ভাটা মালিক মিঠু জানান, তিন বছর যাবৎ পরিবেশের কোনো ছাড়পত্র পাইনি, লাইসেন্স নেই। তবে সরকার আমাদের কাছ থেকে আয়কর ও ভ্যাট আদায় করছে। এরপরও কয়েকবার আমাদের জরিমানা করা হয়েছে।
ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহেরা নাজনীন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তাদের সহযোগিতায় এসব জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।