কম দামে সহজলভ্য হওয়ায় পাঙাশ মাছ অনেকের পছন্দ। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়— এই মাছ কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর? কেউ বলেন এতে চর্বি বেশি, আবার কেউ বলেন এতে পুষ্টিগুণ কম। তাই নিয়ে দ্বিধায় থাকাটা স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন : সুস্থ থাকতে রাতে ভাত খাবেন, না রুটি? যা বলছেন পুষ্টিবিদ
আরও পড়ুন : খালি পেটে দুধ চা খাচ্ছেন? জেনে নিন পুষ্টিবিদের সতর্কবার্তা
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ মাহিনুর ফেরদৌস, যিনি রাজধানীর হলিক্রস মেডিকেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত। চলুন জেনে নিই পাঙাশ মাছের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং কখন তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
পাঙাশে কী পুষ্টি উপাদান আছে?
পাঙাশ মাছে রয়েছে :
- উন্নত মানের প্রোটিন
- গুরুত্বপূর্ণ অ্যামাইনো এসিড
- আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (ভালো চর্বি)
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
- ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
এগুলো শরীর গঠনে, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
পাঙাশ মাছের উপকারিতা
হার্টের জন্য ভালো
পাঙাশে থাকা ওমেগা-৩ ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
পেশি গঠনে সহায়ক
উচ্চমানের প্রোটিন শরীরের পেশি গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে।
হাড় ও দাঁতের গঠন
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে।
অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য উপকারী
ভ্রূণের স্নায়ু ও মস্তিষ্ক গঠনে সহায়তা করে ওমেগা-৩। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পাঙাশ খাওয়া যেতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় রাখে।
কখন পাঙাশ মাছ খাওয়া হতে পারে বিপজ্জনক?
পুষ্টিবিদ মাহিনুর ফেরদৌস সতর্ক করেছেন কিছু বিষয়ে :
আরও পড়ুন : ড্রাগন ফলে ‘টনিক’ চেনার উপায় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি জানুন
আরও পড়ুন : নিয়মিত বেদানা খাওয়ার ৭ দারুণ উপকারিতা জানালেন পুষ্টিবিদ
এখন অনেক পুকুরে চাষ করা পাঙাশ নানা রকম কৃত্রিম খাদ্য ও ওষুধ দিয়ে বড় করা হয়। ফরমালিন বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয় মাছ দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য। এসব রাসায়নিক মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। আবার অস্বাস্থ্যকর রান্না বা সংরক্ষণ পদ্ধতি থেকেও ঝুঁকি তৈরি হয়।
তাহলে খাওয়া উচিত কি না?
হ্যাঁ, তবে সতর্কতার সঙ্গে। খাঁটি ও নিরাপদ উৎস থেকে কিনুন। সম্ভব হলে নদীর পাঙাশ বা প্রাকৃতিকভাবে চাষ করা মাছ বেছে নিন। এবং রান্না ভালোভাবে করুন, পর্যাপ্ত তাপে সেদ্ধ করুন।
নিয়মিত খাবার হিসেবে খাওয়া যেতে পারে, তবে সব মাছের মতোই বৈচিত্র্য বজায় রাখা ভালো।