দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে বেসরকারি অপারেটর হিলি পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এসময় ভারত থেকে আমদানি করা কোনো পণ্য আনলোড (খালাস) করছেন না শ্রমিকরা। ফলে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা।
শনিবার (২১ জুন) দুপুর ১টার দিকে পানামা পোর্টের ‘কুলি শ্রমিক ঐক্য ৩০ গ্রুপ সমন্বয় পরিষদ কমিটি’র ব্যানারে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়।
শ্রমিকদের দাবি, বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট আমদানিকারকদের কাছ থেকে পণ্য লোড-আনলোড বাবদ যে পরিমাণ অর্থ আদায় করে, তার ছয় ভাগের এক ভাগ শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয়।
ন্যায্য পারিশ্রমিক না দেওয়া হলে কর্মবিরতি চলবে বলে জানান শ্রমিকরা।
তারা জানান, প্রতি টন পণ্যে ৭৩.১৭ টাকা আমদানিকারকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়। আর শ্রমিকদের পরিশোধ করা হয় টন প্রতি ১৩ টাকা।
জানতে চাইলে কয়েকজন শ্রমিক আক্ষেপ করে বলেন, আমরা ২০ বছর ধরে হিলি পানামা পোর্টে পণ্য লোড-আনলোড করে আসছি। কিন্তু ন্যায্যমূল্য কখনো পাইনি। পোর্টে সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করি। বিনিময়ে ন্যায্য পারিশ্রমিক পাই না।
কুলি শ্রমিক ঐক্য গ্রুপ সমন্বয় পরিষদ কমিটির সরদার হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা শুনেছি আমদানিকারকদের থেকে টন প্রতি নেওয়া হয় ৭৩.১৭ টাকা। কিন্তু আমাদের এখন ১৩ টাকা টন হিসেবে মজুরি দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের পরিবার নিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছি। তাই আমরা আজকে থেকে কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।
আসলাম নামে এক শ্রমিক বলেন, আমাদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ এবং সরদার সবাই বেইমানি করেছেন। আমাদের দেওয়া হয় ১৩ টাকা, সেখান থেকে আবার সরদার কমিশন খার ৬ টাকা। আর আমরা পাচ্ছি ৭ টাকা। তাই সরদারকে কত টাকা টনপ্রতি দেওয়া হয় সে বিষয়ে আমরা পরিষ্কারভাবে জানতে চাই।
বন্দরে ট্রাক সরবরাহকারী মাহাদি হাসান বলেন, আমার ছয় গাড়ি মসুর ডাল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও ঢাকায় যাওয়ার কথা। কিন্তু ট্রাক লোড করতে পারছি না। এতে বিপাকে পড়েছি।
টাঙ্গাইল থেকে মসুর ডাল নিতে আসা রাম প্রসাদ শীল নামে এক ব্যক্তি বলেন, এখানে শ্রমিকদের আন্দোলনের চলছে। সকাল থেকে পণ্য নিয়ে বসে আছি। যদি ট্রাক লোড না হয় তাহলে চালকে ৩ হাজার টাকা ডেমারেজ দিতে হবে।
জানতে চাইলে হিলি স্থলবন্দরের পানামা পোর্টের ব্যবস্থাপক নেপাল বাবু জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আজকের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
মো. মাহাবুর রহমান/জেডএইচ/জেআইএম