পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে ভবন-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ
বাগেরহাটের চিতলমারীর কুরমনি মৌজার বেড়িবাঁধের দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছে শত শত পাকা ও আধাপাকা ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কাঠের তৈরি বসত ঘর। পাশাপাশি রয়েছে নির্মাণাধীন কয়েকটি স্থাপনা। তবে এসব স্থাপনাই নির্মাণ করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখল করে। জানা গেছে, বিভিন্ন সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে তালিকা ও চিঠি চালাচালি হলেও, দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকারি এই দপ্তরটি। সবশেষ গত ২৭ অক্টোবর ১৭২টি অবৈধ স্থাপনার মালিককে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারসংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেরিবাঁধের দুই পাশজুড়ে দখলদারদের দাপট। নির্মিত হয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাসাবাড়ি, দোকানপাট, কারখানা ও মার্কেট। এখানে রয়েছে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল খানের তিন তলা বাড়ি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্সির তিনতলা ভবন, জেলা বিএনপি নেতা মঞ্জুর মোরশেদ স্বপনের একতলা ভবন, ডা. কাজী মফিদুল ইসলাম বাবুলের দুই তলা ভবন। এছাড়া অসংখ্য পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা ভবন রয়েছে বেরিবাঁধের দুই পাশে। স
বাগেরহাটের চিতলমারীর কুরমনি মৌজার বেড়িবাঁধের দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছে শত শত পাকা ও আধাপাকা ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কাঠের তৈরি বসত ঘর। পাশাপাশি রয়েছে নির্মাণাধীন কয়েকটি স্থাপনা। তবে এসব স্থাপনাই নির্মাণ করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখল করে।
জানা গেছে, বিভিন্ন সময় এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে তালিকা ও চিঠি চালাচালি হলেও, দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকারি এই দপ্তরটি। সবশেষ গত ২৭ অক্টোবর ১৭২টি অবৈধ স্থাপনার মালিককে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারসংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেরিবাঁধের দুই পাশজুড়ে দখলদারদের দাপট। নির্মিত হয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাসাবাড়ি, দোকানপাট, কারখানা ও মার্কেট। এখানে রয়েছে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল খানের তিন তলা বাড়ি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্সির তিনতলা ভবন, জেলা বিএনপি নেতা মঞ্জুর মোরশেদ স্বপনের একতলা ভবন, ডা. কাজী মফিদুল ইসলাম বাবুলের দুই তলা ভবন। এছাড়া অসংখ্য পাকা, আধাপাকা ও কাঁচা ভবন রয়েছে বেরিবাঁধের দুই পাশে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল গফফার বলেন, এখানে বেরিবাঁধ হয়েছে অনেক আগে। সড়কের দুই পাশে ফাকা জায়গা ছিল। পানিও ছিল, সবাই বালু ভরাট করে ভবন নির্মাণ করেছে। যখন যারা ক্ষমতায় থাকে তারাই এই ভবন নির্মাণ করেছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, এসব ভবন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অজানা নয়। একটা তিন তলা ভবন করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগে, যখন নির্মাণ করেছে তখন কেন বাঁধা দেয়নি। এই চিঠি দিয়েছে, আবার দেখবেন দখলদাররা বহাল তবিয়তে আছে। আসলে টাকার কাছে সবাই দুর্বল।
দখলদারদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল হোসেন খান কারাগারে রয়েছেন। আরও কয়েকজনকে ফোন করলে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তারা।
তবে ইসলামী আন্দোলনের নেতা জাহাঙ্গীর আলম মুন্সি জানান, যে জমিতে তার ভবন রয়েছে ওই জমি তিনি পৈতৃক সূত্রে পেয়েছেন। উপজেলা পরিষদ থেকে ভবনের নকশার অনুমোদন নিয়ে তিনি এই ভবন করেছেন। অনুমোদনের তালিকায় আরও অনেকের নাম রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে বাঁধের দুই পাশে বসবাসকারী জানান, নিজেদের কোনো জমি জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে বসতি গড়েছেন তারা। উচ্ছেদ শুরু হলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দখলদার বলেন, সরকারি জায়গায় সরকারি লোকের সম্মতি ছাড়া আমরা ভবন করিনি। কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব সার্ভেয়ার মো. নাইমুল হককে টাকার বিনিময়ে ভবন করা হয়েছে।
এমন অভিযোগ অস্বীকার করে নাইমুল হক বলেন, অল্পদিন হয়েছে এই দায়িত্ব পেয়েছি। দখলদারদের চিঠি দেওয়ায়, তারা এই অপপ্রচার করছেন।
এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ছিলেন সমীর বিশ্বাস। দখলদারদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় পাউবো।
চিতলমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুমিনুল হক টুলু বিশ্বাস জানান, তার দলের কেউ এই দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত না। আর দখলদাররা যতই শক্তিশালী হোক তাদের উচ্ছেদ করে সরকারি জমি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজে ব্যবহার করা হোক।
পাউবো বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নতুন করে কেউ যেনো অবৈধ দখল করতে না পারে সেজন্য কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে। আর নোটিশ জারির পরে নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই শুরু হবে উচ্ছেদ অভিযান।
দখল প্রক্রিয়ায় সরকারি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই দপ্তরের কোনো কর্মচারী-কর্মকর্তা যদি এমন কাজে যুক্ত হয় এবং এর প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটের ৯টি উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত ৩ হাজার ৬শ’ একর জমি রয়েছে, এসব জমিতে ২ হাজারের বেশি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।
নাহিদ ফরাজী/এনএইচআর/জেআইএম
What's Your Reaction?