পাবনায় চার দফা দাবিতে পরীক্ষা বর্জন সরকারি শিক্ষকদের

ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন পাবনার সরকারি মাধ্যম্যিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সহকারী শিক্ষক পদকে নবম গ্রেডের বিসিএস ক্যাডারভূক্তকরণ ও নিয়মিত পদোন্নতিসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। সরেজমিনে পাবনা জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসলেও অবসর সময় কাটাচ্ছেন তারা। কেউ গল্প আবার কেউবা আড্ডায় মেতে থাকলেও শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না শিক্ষকরা। ফলে নির্ধারিত পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে আসলেও ফিরে যেতে হচ্ছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নিয়মিত পদোন্নতি ও পদায়ন দেওয়া হয় না। আদালতের রায় পক্ষে থাকলেও বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া হয় না। বিভিন্ন সময় শিক্ষ

পাবনায় চার দফা দাবিতে পরীক্ষা বর্জন সরকারি শিক্ষকদের

ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন পাবনার সরকারি মাধ্যম্যিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সহকারী শিক্ষক পদকে নবম গ্রেডের বিসিএস ক্যাডারভূক্তকরণ ও নিয়মিত পদোন্নতিসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সরেজমিনে পাবনা জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিদ্যালয়গুলো ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে আসলেও অবসর সময় কাটাচ্ছেন তারা। কেউ গল্প আবার কেউবা আড্ডায় মেতে থাকলেও শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন না শিক্ষকরা। ফলে নির্ধারিত পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে বিদ্যালয়ে আসলেও ফিরে যেতে হচ্ছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নিয়মিত পদোন্নতি ও পদায়ন দেওয়া হয় না। আদালতের রায় পক্ষে থাকলেও বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া হয় না। বিভিন্ন সময় শিক্ষকরা এসব দাবি উত্থাপন করলেও কোনোভাবেই তাদের যৌক্তিক দাবি মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে এমন কর্মবিরতি পালন করছেন তারা।

পাবনা জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে থাকতে চাই না। কিন্তু এসময়ে বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েছি। সরকারি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি পিটিআই’র ইনস্ট্রাক্টর, সাবরেজিস্ট্রার ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার মত পদের সমমর্যাদার বা পস্পপর বদলিযোগ্য ছিল। নবম গ্রেড হওয়াসহ এসব পদে বিভিন্ন সুবিধা দেয়া হলেও গত ৫৪ বছরে সহকারী শিক্ষক পদটি এখনো অবহেলিত। আমার চাকরিজীবন ২৫ বছরের বকেয়া টাইমস্কেলটিও দেয়া হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়া সত্ত্বেও দেওয়া হচ্ছে না। এসব বৈষম্য ও অন্যায়ের সঠিক সমাধান চাই আমরা।

সহকারী শিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম ও নাজিয়া হাসান বলেন, বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী সারাদেশেই এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আমরা আগেই পরীক্ষা বর্জন সংক্রান্ত নোটিশ দিয়েছি। এরপরও কিছু শিক্ষার্থী এসে ফিরে যাচ্ছে। এজন্য কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে আমরা ক্ষমা চাই। যে এই সময়েও আমাদের কর্মবিরতিতে থাকতে হচ্ছে।

এ শিক্ষকরা জানান, তাদের দাবি মাত্র চারটি এবং এগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক-ন্যায্য দাবি। কিন্তু কেনো সেগুলো এখনো মানা হচ্ছে না সেটি তাদের বুঝে আসে না। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া অবধি আমাদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন বা কর্মবিরতি চলতে থাকবে।

এদিকে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক, নির্বাচনী ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা নির্ধারিত সময়েই নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো হলো- সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভূক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর’-এর গেজেট প্রকাশ। বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া। ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের ২ থেকে ৩টি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।

আলমগীর হোসাইন নাবিল/এনএইচআর/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow