পাহাড়ে কনকনে শীত
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। বইয়ের পাতায় শরৎকাল হলেও প্রচণ্ড শীতে জবুথবু এ এলাকার মানুষ। বিকেল থেকেই কুয়াশায় মুখ ঢেকে যায় পাহাড়ের আঁকাবাঁকা মাঠঘাট, মেঠোপথ। রাতভর টুপটাপ শব্দে ঝরছে কুয়াশা। কুয়াশা কেটে দেরিতে উঁকি দিচ্ছে সকালের সূর্য। কথিত আছে অতি গাছপালায় নাকি শীত থাকে বেশি। তাই হয়তো গ্রামে শীত অনুভূত হয় বেশি।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) মাটিরাঙ্গায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দীঘিনালা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে চরম শীতেও বসে নেই কৃষকরা। কষ্টার্জিত সোনালি ধান কেটে ঘরে তোলার প্রক্রিয়াও প্রায় শেষের দিকে। এ ছাড়া গত বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে এ বছর বাম্পান ফলন হয়েছে।
অন্যদিকে তীব্র শীতে মাটিরাঙ্গা বাজারের একাধিক স্থানে বিক্রি হচ্ছে বাহারি রকমের শীতের পিঠা। বেশ আগ্রহভরে বিভিন্ন ধরনের ভর্তা দিয়ে পিঠা খাবার স্বাদ নিচ্ছেন অনেকে। এছাড়াও শীত থেকে বাঁচতে শরীরে গরম কাপড় জড়াতে কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। শীতের তীব্রতায় হতদরিদ্র ও অসহায় শীতার্ত মানুষগুলো কষ্ট পাচ্ছেন। তবে সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ এখনো শুরু হয়নি।
চড়পাড়ার কৃষক গণি মিয়া জানান, শীতের মধ্যে কাজে যেতে মন চায় না। তাছাড়া দিন ছোট বিধায় গৃহস্থরা কাজে নিতে চায় না। তবে ক্ষেতে-খামারে পানিতে কাজ করলে সর্দি লেগে পরের কদিন কাজে যেতে পারি না।
দীঘিনালা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজুতি চাকমা জানান, বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) মাটিরাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারও সেটা অপরিবর্তিত। আজ আকাশ কিঞ্চিত মেঘলা হওয়ায় দিনের শেষ দিকে ২-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। মেঘলা ভাব কেটে গেলে তাপমাত্রা কমে শীত আরও বাড়বে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মিল্টন চাকমা বলেন, তীব্র শীতে সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা, গলা ব্যথা, হাঁচি, অ্যাজমা, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। তাই এসব রোগে সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। একইসঙ্গে শিশু ও বয়স্কদের গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। শরীরে শক্তি জোগায় এমন খাবার খেতে হবে। আর যে কোনো জটিলতা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।