প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে পাবনায় গণসমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বরে এ সমাবেশ হয়।
দলটির পাবনা জেলা পশ্চিম শাখার সভাপতি মাওলানা রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন। এসময় দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুন নাবী, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা ইকবাল হোসাইন, জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতিনিধি আসিফ আহমেদসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, বর্তমান আসনভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা গত ৫০ বছর ধরে দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারী সরকারের জন্ম দিয়েছে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যমান সংবিধান বাতিল করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংসদ নির্বাচন ছাড়া জুলাই শহীদদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। পিআর পদ্ধতি আদায়ে ইসলামী দলগুলোর নেতৃত্বে কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এ দেশে প্রথম রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, ভোট ডাকাতির গণভোটে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, আওয়ামী লীগ বারে বারে দেশে ভোটচুরি ও জালভোটের নির্বাচন করেছে। ভারতের প্রেসক্রিপশনে স্বৈরাচারি সরকার ব্যবস্থা গড়েছে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন হলে এই কারচুপি জালিয়াতির পথ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই বিএনপি পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইনশাআল্লাহ পিআর পদ্ধতিতেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা হবে।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও পাবনা সদর আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ ইকবাল হোসাইন বলেন, ইসলামী নেতৃত্ব ছাড়া বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বিগত দিনগুলোতে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কখনোই ইসলামী মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সঠিক ভূমিকা রাখেনি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানুষের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে ও ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে লড়বে ও এদেশের জনগণ ইসলামের পক্ষে রায় দেবে।
মাওলানা ইকবাল আরও বলেন, গত ৫৪ বছর ধরে জামায়াতকে রাজাকার আলবদর স্বাধীনতাবিরোধী বলে অপপ্রচার করেছে। কিন্তু তারাই এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। দেশের মানুষ ইসলামী দলগুলোর পক্ষে আছে যার প্রমাণ ডাকসু, জাকসুর নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে। জনগণ ইসলামী দলগুলোকে একসাথে দেখতে চাইছে। জামায়াত এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত। পিআর ছাড়া কোন নির্বাচন এদেশে হতে দেয়া হবে না।
সমাবেশে আওয়ামীলীগ, জাতীয়পার্টি ও ১৪ দলের নিবন্ধন বাতিল এবং জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানান বক্তারা।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এমএন/এমএস