পুত্রবধূকে ধর্ষণচেষ্টা, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার

5 hours ago 6

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুত্রবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে শ্বশুর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ মার্চ) বিকেলে উপজেলা আগানগর ইউনিয়নের জগমোহনপুর এলাকা থেকে তাদের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ওই এলাকার তোতা আলীর ছেলে আমির আলী (৬৫) ও তার সহধর্মিণী সমেলা বেগম (৫৫)। 

অভিযোগকারী নারী অভিযুক্তের ছেলে সাব্বিরের স্ত্রী দেলোয়ারা (২৪)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর বিটুই গ্রামের হাসেম মিয়ার মেয়ে। 

ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানি তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আগানগর ইউনিয়নের জগমোহনপুর এলাকার আমির আলীর ছেলে সাব্বিরের সাথে ৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় দেলোয়ারা বেগমের। সংসারের তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। গত ২ বছর আগে পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে প্রবাসে চলে যায় সাব্বির। ছেলে প্রবাসে যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় দেলোয়ারার ওপর শারীরিক নির্যাতন। বিভিন্নভাবে চলে অত্যাচার-অবিচার। গত তিন বছর আগে শ্বশুর আমির আলী তার পুত্রবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি স্থানীয়রা পারিবারিক সালিশির মাধ্যমে পুত্রবধূর কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটমাট করে। 

এদিকে গত ১২ মার্চ রাতে পুত্রবধূর শয়নক্ষে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে শ্বশুর আমির আলী। এসময় ডাকচিৎকার শুরু করলে শ্বশুর পালিয়ে যায়। বিষয়টি শাশুড়ি সমেলা বেগমকে অবগত করলে তিনি উল্টো পুত্রবধূকে শারীরিক নির্যাতন করে। মারধর করে একপর্যায়ে চোখে মুখে জখম করে। পরবর্তী ১৬ মার্চ রাতে ভৈরব থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা ও মারধর করে জখমের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে দেলোয়ারা বেগম। 

ভুক্তভোগী পুত্রবধূ দেলোয়ারা বেগম বলেন, আমার শ্বশুর আমার বিয়ের পর থেকেও আমার প্রতি কুদৃষ্টি দেয়। তিন বছর আগে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে কোনো রকম প্রাণে বেঁচে যায়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি মীমাংসা করে। এরপর থেকে আমাকে প্রায় সময় শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করতো। ১২ মার্চ রাতে আমি নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার শ্বশুর ঘরে ঢুকে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি শাশুড়িকে বিষয়টি জানালে তিনিও আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত করে। পরে আমি কোনো রকম প্রাণে বেঁচে আমার বড় বোনের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয় ও ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়। আমি আমার লম্পট শ্বশুর ও তাকে সহায়তাকারী আমার শাশুড়ি বিচার চাই। কোনো পুত্রবধূ যেন আমার মতো ধর্ষণের শিকার না হয়। 

এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে জানা যায় গৃহবধূর শ্বশুর আমির আলী লম্পট প্রকৃতির লোক। পরেই তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। গ্রেপ্তারদের সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
 

Read Entire Article