পুরান ঢাকায় ভূমিকম্প ঝুঁকি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাড়ছে বিপদ

পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা ও সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. আশিকুজ্জামান আশিক। জাগো নিউজ: পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কেন বেশি? অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: পুরান ঢাকায় সারি সারি পুরোনো ও জীর্ণ ভবন রয়েছে, যেগুলোর কাঠামো অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনগুলোর অনেকগুলোই ব্যবহারে অরক্ষিত এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিপদ বাড়ছে। আমরা দেখেছি, শুধু ছাদ থেকে ছোট টুকরো পড়েও মানুষ মারা গেছে। অর্থাৎ ঝুঁকি সবসময় শুধু ভবন ধস নয়, ছোট অংশ আলগা হয়ে পড়াও প্রাণঘাতী হতে পারে। জাগো নিউজ: এই পরিস্থিতিতে কার দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি? অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। ভবনের মালিক, ভাড়াটিয়া, ব্যবহারকারী সবাইকে মানবিক হতে হবে। নিজের ভবন অন্যের ক্ষতি করছে কি

পুরান ঢাকায় ভূমিকম্প ঝুঁকি, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাড়ছে বিপদ

পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় নিরাপত্তা ও সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খানের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. আশিকুজ্জামান আশিক

জাগো নিউজ: পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কেন বেশি?

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: পুরান ঢাকায় সারি সারি পুরোনো ও জীর্ণ ভবন রয়েছে, যেগুলোর কাঠামো অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। এই ভবনগুলোর অনেকগুলোই ব্যবহারে অরক্ষিত এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিপদ বাড়ছে। আমরা দেখেছি, শুধু ছাদ থেকে ছোট টুকরো পড়েও মানুষ মারা গেছে। অর্থাৎ ঝুঁকি সবসময় শুধু ভবন ধস নয়, ছোট অংশ আলগা হয়ে পড়াও প্রাণঘাতী হতে পারে।

জাগো নিউজ: এই পরিস্থিতিতে কার দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি?

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। ভবনের মালিক, ভাড়াটিয়া, ব্যবহারকারী সবাইকে মানবিক হতে হবে। নিজের ভবন অন্যের ক্ষতি করছে কি না সেদিকে নজর দিতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোও নিয়মিত ঝুঁকি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুন
নিটোরে ভূমিকম্পে আহত ৯০ জনের চিকিৎসা, ভর্তি ১৮
নরসিংদীতে ভূমিকম্পে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৫
ঢাকার ৯০ শতাংশ ভবনেরই কোনো অনুমোদন নেই: পরিবেশ উপদেষ্টা
‘যে কোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে’

জাগো নিউজ: ভবন ব্যবহারকারীরা কীভাবে ঝুঁকি কমাতে পারেন?

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: ছাদে ফুলের টবসহ ভারী বা আলগা বস্তু রাখা উচিত নয়। ভবনের বাইরের অংশ পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না তা বিবেচনায় রাখতে হবে। গ্যাসলাইন, বৈদ্যুতিক সংযোগ ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে। কারণ শুধু ভবনের বাইরে নয়, ভেতরেও আগুন, বিস্ফোরণসহ নানান দুর্যোগের সম্ভাবনা আছে।

জাগো নিউজ: এসব ঝুঁকির মনিটরিং ও ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব কার?

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: মূলত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও সিটি করপোরেশন সমন্বয় করে কাজ করতে পারে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে পুরান ঢাকার পঞ্চায়েত কমিটিগুলোও ভূমিকা রাখতে পারে। নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ এবং করণীয় নির্দেশনা জনগণকে জানাতে হবে। প্রয়োজনে এলাকায় বিশেষ কমিটি গঠন করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন
হঠাৎ বড় ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কী? যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
২৩ মাসে দেশে ১৯ ভূমিকম্প, কোনটির কোথায় উৎপত্তি?
৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কতটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে একটি শহর
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে স্মরণকালে এত বড় ভূমিকম্প হয়নি

জাগো নিউজ: সামগ্রিক সমাধান কীভাবে সম্ভব?

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: ভবন মালিক, ভাড়াটিয়া, স্থানীয় জনগণ, রাজউক, সিটি করপোরেশন সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে সমন্বিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যাতে কোনো দুর্যোগে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পুরান ঢাকায় নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা যৌথ দায়িত্ব।

জাগো নিউজ: জাগো নিউজকে সময় দেওয়ায় আপনাকে ধন্যবাদ।

অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান: আপনাকেও ধন্যবাদ।

এমডিএএ/এমএমএআর/এমএফএ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow