পুলিশের অ্যাকশনের পর রাস্তায় শুয়ে পড়লেন ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা

2 months ago 6

রাজধানীর নতুনবাজারে ব্লকেড (অবরোধ) করা বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এবার তারা ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়েছেন। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ সব দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার (২১ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাস্তা অবরোধ করে পূর্বঘোষিত ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী মানুষ।

বেলা ১১টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এতে তিন শিক্ষার্থী আহত হন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।

পুলিশের অ্যাকশনের পর রাস্তায় শুয়ে পড়লেন ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা

পুলিশের অ্যাকশনে ছত্রভঙ্গ হয়ে কিছু সময়ের জন্য রাস্তা ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই তারা আবারও সংগঠিত হয়ে পুনরায় সড়ক অবরোধ করেন। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় শুয়ে পড়তে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের ওপর হামলা করেছে। তারপরও তারা রাস্তা ছাড়েননি। পুলিশের মারধরে তাদের তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। যতক্ষণ দাবি না মানা হবে ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে তাদের দাবি জানাচ্ছেন। তারা ‘হয় বহিষ্কার বাদ যাবে, না হয় আমার লাশ যাবে’, ‘প্রত্যাহার বহিষ্কার, তারপর হবে সংস্কার’, ‘পা চাটলে পুরস্কার, না চাটলে বহিষ্কার’, ‘বহিষ্কার প্রত্যাহার, করতে হবে করতে হবে’, ‘অথরিটি স্বৈরাচার, এবার তোরা গদি ছাড়’, ‘প্রাইভেটখাতে শিক্ষাকর, করতে হবে প্রত্যাহার’, ‘১ ২ ৩ ৪, প্রাইভেট সংস্কার’, ‘প্রাইভেট সব মাঠে থাক, সিন্ডিকেট নিপাত যাক’ স্লোগান দিচ্ছেন।

ডিএমপির ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, প্রায় আড়াইঘণ্টা ধরে রাস্তা বন্ধ। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি দূর করতে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছি। তারা সড়ক ছাড়তে নারাজ। এজন্য তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে তারা পুনরায় রাস্তা ব্লকড করেছেন। আমরা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।

পুলিশের অ্যাকশনের পর রাস্তায় শুয়ে পড়লেন ইউআইইউ শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা মূলত দুই দাবিতে ব্লকেড কর্মসূচি করছেন। তাদের দাবিগুলো হলো- উপাচার্য ও একজন বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় যেসব শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের বহিষ্কারাদেশ নিঃশর্তে তুলে নেওয়া। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শূন্যতা কাটিয়ে দ্রুত স্বাভাবিক অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু করা।

ইউআইইউ সূত্র ও শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৬ ও ২৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের জেরে উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। এরপর ২৮ এপ্রিল ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য সব শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে। যদিও ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে ক্যাম্পাসে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি করে আসছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের যৌক্তিক ১৩ দফা দাবি দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষা করে আসছে। উল্টো আন্দোলন দমন করতে বহিষ্কার করা হচ্ছে। গত ২ জুন ৪১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী ও ১৬ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বাকি একজনকে সতর্কবার্তা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এএএইচ/কেএসআর/এএসএম

Read Entire Article