রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় পুলিশের তিন এসআই ও এক এএসআইসহ চার পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের একজন সোর্স গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রায়েরবাজার বোর্ড ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- আফজালুর রশিদ, জসীমউদ্দীন, খোরশেদ আলম ও সোহেল রানা। এছাড়া পুলিশের সোর্স আল-আমিন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ হামলার ঘটনার নেপথ্যে রায়েরবাজার বোর্ড ঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং ‘পাটালি গ্রুপ’ জড়িত বলে জানা গেছে।
- আরও পড়ুন
- হাতিরঝিলে ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ গোলাগুলি, কলা বিক্রেতাসহ গুলিবিদ্ধ ২
- কারামুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন বাতিল চাইবে পুলিশ
জানা যায়, কয়েকদিন আগে একাধিক হত্যা মামলার আসামি ও বোর্ড ঘাট এলাকার কিশোর গ্যাং গ্রুপ পাটালি গ্রুপের মূলহোতা ফালানকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই সময় পাটালি গ্রুপ ও বোর্ড ঘাটের মাদক কারবারিরা পুলিশের হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ব্যর্থ হয়ে গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যায় পুলিশের অভিযানের সময় তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা।
হামলার নেতৃত্ব দেন পাটালি গ্রুপের ল্যাংড়া হাসান, ফরহাদ ও চিকু শাকিল। তাদের নেতৃত্বে এ গ্রুপের সদস্য পিচ্চি হাসান, স্বপন, শাহিন, ছোট্ট হাসান, সবিজ মুন্না, দিপু, সম্রাট, রফিক, রাকিব ও রাসেলসহ ৩০-৪০ জন এ হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসী জানান, রায়েরবাজার এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা মূলত কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো টিকিয়ে রেখেছে। কেউ মাদক বন্ধ করতে গেলে কিংবা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গেলেই তাদের ওপর গ্রুপের সদস্যরা হামলা চালায়। এসব মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাংগুলোর পেছনে আগে আওয়ামী লীগের নেতা শাহ আলম জীবন ও তারেকুজ্জামান রাজিব শেল্টার দিলেও বর্তমানে বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা শেল্টার দিচ্ছেন।
এর আগে এ কিশোর গ্যাং গ্রুপটি মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল।
পুলিশের ওপর কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলার ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান জানান, গতকাল (বুধবার) পুলিশ অভিযানে গেলে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ও মাদক কারবারিরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
তিনি বলেন, তবে, ইনজুরিটা এত বেশি হয়নি। যেহেতু পুলিশ কিশোর গ্যাং ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে একেবারে জিরো টলারেন্স, সেজন্য ওই এলাকার মাদক কারবারি ও কিশোর গ্যাং সদস্যরা পুলিশের সংখ্যা কম থাকায় হামলার ঘটনা ঘটায়।
ডিসি ইবনে মিজাম আরও জানান, এরপর রাতেই যৌথবাহিনীর অভিযানে ওই এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস