পূজা না করায় খ্রিস্টান সেনা বরখাস্ত, শাস্তি বহাল রাখলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টও
নিজ রেজিমেন্টের মন্দিরে প্রবেশ করে পূজায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় বরখাস্ত হওয়া এক খ্রিস্টান সেনা কর্মকর্তার শাস্তি বহাল রেখেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আদালত বলেন, ওই কর্মকর্তা নিজের ধর্ম সম্পর্কে ‘ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা’ ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন ও সৈন্যদের ‘অপমান’ করেছেন। মঙ্গলবার মুখ্য বিচারপতি সুর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, নেতৃত্ব দিতে হলে উদাহরণ দেখাতে হয়। আপনি আপনার সৈন্যদের অপমান করেছেন। আপনার ধর্মগুরু (একজন পাদ্রী) যখন আপনাকে বলেছিলেন যে এটি করতে কোনো সমস্যা নেই, তখনই বিষয়টি আপনার মেনে নেওয়া উচিত ছিল। আপনি একগুঁয়ে আচরণ করেছেন, একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে আপনি ধর্মের ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা মানতে পারেন না। মুখ্য বিচারপতি আরও বলেন, আবেদনকারী স্যামুয়েল কামালেসানের রেজিমেন্টাল ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে অস্বীকৃতি ছিল ‘সবচেয়ে গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের উদাহরণ’। বিচারপতি কান্ত বলেন, আপনি শত কাজে দক্ষ হতে পারেন, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী তার ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। আপনি নিজের সৈন্যদের অনুভূতিকে মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। মৌলিক অধিকার
নিজ রেজিমেন্টের মন্দিরে প্রবেশ করে পূজায় অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় বরখাস্ত হওয়া এক খ্রিস্টান সেনা কর্মকর্তার শাস্তি বহাল রেখেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আদালত বলেন, ওই কর্মকর্তা নিজের ধর্ম সম্পর্কে ‘ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা’ ব্যবহার করে সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন ও সৈন্যদের ‘অপমান’ করেছেন।
মঙ্গলবার মুখ্য বিচারপতি সুর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, নেতৃত্ব দিতে হলে উদাহরণ দেখাতে হয়। আপনি আপনার সৈন্যদের অপমান করেছেন। আপনার ধর্মগুরু (একজন পাদ্রী) যখন আপনাকে বলেছিলেন যে এটি করতে কোনো সমস্যা নেই, তখনই বিষয়টি আপনার মেনে নেওয়া উচিত ছিল। আপনি একগুঁয়ে আচরণ করেছেন, একজন সেনা কর্মকর্তা হিসেবে আপনি ধর্মের ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা মানতে পারেন না।
মুখ্য বিচারপতি আরও বলেন, আবেদনকারী স্যামুয়েল কামালেসানের রেজিমেন্টাল ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে অস্বীকৃতি ছিল ‘সবচেয়ে গুরুতর শৃঙ্খলাভঙ্গের উদাহরণ’।
বিচারপতি কান্ত বলেন, আপনি শত কাজে দক্ষ হতে পারেন, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনী তার ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত। আপনি নিজের সৈন্যদের অনুভূতিকে মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
মৌলিক অধিকারের প্রসঙ্গ
বিচারপতি বাগচি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোপাল সংকরণারায়ণকে প্রশ্ন করেন, কোন খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থে মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে তা দেখাতে। সংকরণারায়ণ যুক্তি দেন, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ এ প্রদত্ত ধর্মচর্চার মৌলিক অধিকার কেবলমাত্র সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত হওয়ার কারণে কেড়ে নেওয়া যায় না।
জবাবে বিচারপতি বাগচি বলেন, অনুচ্ছেদ ২৫ ধর্মের মৌল বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা করে, সব অনুভূতিকে নয়।
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, কামালেসান বারবার পরামর্শ দেওয়া সত্ত্বেও বাধ্যতামূলক রেজিমেন্টাল প্যারেডে অংশ নেননি। এতে ইউনিটের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দিল্লি হাইকোর্ট চলতি বছরের মে মাসে সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্ত বহাল রেখে জানান, কামালেসান ধর্মকে ঊর্ধ্বে রেখে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বৈধ নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, যা স্পষ্ট শৃঙ্খলাভঙ্গ। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, তার এ আচরণ ‘সামরিক নীতির পরিপন্থি।
কামালেসান দাবি করেছিলেন, সহযোদ্ধাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, একই পতাকা ও জাতির প্রতি আনুগত্য এবং একই খাবার, অনুশীলন, থাকার জায়গা ও দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার ভিত্তিতে; ধর্মীয় শোভাযাত্রা বা কার্যক্রমের ওপর নয়।
হাইকোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি জানায়, সৈন্যরা তাদের অনুপ্রেরণা, গর্ব ও যুদ্ধের স্লোগান পান দেবদেবীর প্রতি ভক্তিমূলক চর্চা থেকে। কোনো কর্মকর্তা এসব কার্যক্রমে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলে, তা সৈন্যদের মনোবল, ঐক্য ও যুদ্ধক্ষেত্রে সমন্বয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
সূত্র: দ্য হিন্দু
এসএএইচ
What's Your Reaction?