দুর্গাপূজা ঘনিয়ে এলেও রাজধানীর ইসলামপুরে এখনো জমে ওঠেনি কেনাকাটা। দেশের অন্যতম বড় পাইকারি কাপড়ের এই বাজারে পূজার আগে যেখানে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের ভিড়ে ব্যস্ত সময় পার করেন, এবার সেখানে অচেনা নীরবতা বিরাজ করছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গেলে ব্যবসায়ীরা জানান, পূজাকে ঘিরে প্রতিবছরই বিপুল চাহিদা তৈরি হয়। বিশেষ করে শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট-প্যান্ট, ধুতি, শালওয়ার-কামিজ ও বাচ্চাদের পোশাকের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ক্রেতারা ইসলামপুরে আসেন। কিন্তু এ বছর মন্দার কারণে ক্রেতা আসা কমে গেছে। ফলে বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না।
মিলান নামে ইসলামপুরের এক দোকানি বলেন, বিক্রি নেই বললেই চলে। সকাল থেকে দোকান খোলা রেখেছি, কিন্তু ক্রেতা নেই। তাই বসে বসে শুধু ফোন দেখি, এভাবেই দিন চলে যাচ্ছে।
সান শাইন টেক্সটাইলের ব্যবসায়ী জানান, বাজারে মন্দাভাবের কারণে তারা ব্যাংক ঋণের কিস্তি, দোকান ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
আল মদিনা ফ্যাশন হাউজের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে যে, ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে জমি বিক্রি করার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকার যদি আমাদের কিছু সহযোগিতা করতো, তবে আমরা আরও ভালোভাবে ব্যবসা চালাতে পারতাম। এতে শুধু ব্যবসায়ীরাই বাঁচতো না, দেশের অর্থনীতিও আরও শক্তিশালী হতো। বিদেশে এখনো বাংলাদেশি পোশাকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
মোমেন্ট ফ্যাশনের ম্যানেজার মিম বলেন, সংকট কাটানোর জন্য আমরা সাধারণত দুই ঈদ ও পূজার মৌসুমের দিকেই তাকিয়ে থাকি। কিন্তু এবার ঈদেও তেমন বেচাকেনা হয়নি। আর পূজায় এখনো কোনো ক্রেতা দেখা যাচ্ছে না। ফলে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসলামপুরের ব্যবসায়ীরা উৎসবের মৌসুমে বিক্রি বাড়ার প্রত্যাশায় থাকলেও, বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। পূজার আগে যেখানে আনন্দঘন কেনাকাটার আমেজ থাকার কথা, সেখানে এখন বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা ও সংকটের ছায়া।
টিএইচকিউ/এএমএ/জেআইএম