পূর্বাচলে গাড়িচাপায় বুয়েট ছাত্রের মৃত্যু, শিক্ষার্থীদের ৬ দাবি

3 weeks ago 11

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র মোহতাসিম মাসুদ নিহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। 

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় পলাশী মোড়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—যে কোনো মূল্যে এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ, আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার অবশ্যই বিবাদীপক্ষকে বহন করতে হবে, নিহত মাসুদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে বিবাদীপক্ষকে বাধ্য করতে হবে? তদন্ত কার্যক্রমে বাধাপ্রদানের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, আহতদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ব্যাপারে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর কারো প্রাণ যেন না যায় এবং সড়কে নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়, সেই ব্যাপারে যথোপযুক্ত ভূমিকা রাখতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে পূর্বাচল নীলা মার্কেটের সামনে ৩০০ ফিট রাস্তায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার ছেলে ‘এ’ লেভেলে পড়ুয়া ছেলে ‘সাদমান’ মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে আমাদের এক ভাই, বুয়েট সিএসই (২০২১) ব্যাচের ছাত্র মোহতাসিম মাসুদকে (নজরুল হল)। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন একই ব্যাচের অমিত সাহা (আহ্সানউল্লা হল) এবং মো. মেহেদি হাসান খাঁন (নজরুল হল)।

তারা বলেন, এখন পর্যন্ত এই ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে আমরা অমিতের কাছ থেকে যা জানতে পেরেছি তা হলো, সংকেত পেয়ে তারা বাইক থামিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি যে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু এই আকস্মিক হত্যাকাণ্ডের শোকে আমরা যখন হতবিহ্বল, ঠিক তখনই আমরা জানতে পারি যে, অভিযুক্ত গাড়িচালকের বাবা একজন প্রভাবশালী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল। তার কারণে আমাদের এক ভাইয়ের যখন প্রাণ দিতে হলো, আমাদের আরও দু’ভাই যখন মারাত্মভাবে আহত, হাসপাতালের বিছানায় মারাত্মক যন্ত্রণায় কাতর, ঠিক তখন গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানোর, এমনকি মামলা যাতে না নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, অতীতেও আমরা দেখেছি যে অপরাধী যদি প্রভাবশালী হয়, তাহলে বিভিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়ে, ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, হুমকি-ধামকি দিয়ে, ভিকটিমের পরিবারকে মামলা না করার জন্য চাপপ্রয়োগ করে, প্রাথমিকভাবে মামলা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ধাপে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রভাব খাটায়, কিংবা নানাভাবে ছাড় পেয়ে যায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। 

ঘটনার বিচার দাবি করে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, হত্যা মামলা লেখার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার চাই। আমাদের দাবি, যে কোনো মূল্যে ক্ষমতার বিপরীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হোক।

Read Entire Article