পৃথিবীর সব কূপ কেন গোলাকার হয়? 

2 days ago 10

কূপ বা কুয়া বললেই নিশ্চয়ই আপনার চোখে ভেসে ওঠে সেই গোলাকৃতি দেশি জলাধার, যেখান থেকে পানি তোলা হয়। প্রাচীনকাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই কূপের ব্যবহার দেখা যায়। বর্তমান যুগে ঘরে ঘরে ট্যাপ ও কল থাকলেও অনেক বাড়িতে কুয়া এখনো রয়েছে। অতীতে পানি তোলার জন্য খনন করা হতো এই কূপ। সাধারণত কূপ সর্বদা গোলাকৃতি হয়ে থাকে।

কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, কূপ কেন বর্গক্ষেত্র, ত্রিভুজ বা ষড়ভুজের আকারে হয় না? ত্রিভুজাকৃতির কূপ কি কখনো দেখেছেন? এর পেছনে আছে গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আসুন আজকে জেনে নেওয়া যাক কূপের গোলাকৃতির পিছনের বৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক কারণগুলো।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কুয়া গোলাকার হওয়ার কারণগুলি : 

* গোলাকার কূপ অন্যান্য আকৃতির কূপের তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। যদিও খুব কম বর্গাকার কূপ তৈরি করা হয়, তবুও গোলাকার কূপ তাদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী থাকে। এর প্রধান কারণ হলো- গোলাকার কূপে কোনো কোণ থাকে না। চারপাশে সমানভাবে বৃত্তাকার হওয়ায়, পানির চাপ ও মাটির চাপ সবদিকে সমানভাবে প্রয়োগ হয়। ফলে এই ধরনের কুয়া দীর্ঘদিন অটুট থাকে এবং সহজে ধসে যায় না। 

* পানির চাপ গোলাকার কূপে সবদিকে সমানভাবে বিস্তৃত থাকে। অন্যদিকে, যদি কূপটি বর্গাকার বা ত্রিভুজাকৃতির করা হয়, তাহলে চার কোণায় চাপ বেশি হয়। এর ফলে কূপটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না এবং ভেঙে পড়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। 

* কূপকে দীর্ঘস্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারের জন্য সাধারণত গোলাকার আকারে খনন করা হয়। মনে রাখতে হবে, যখন কোনো তরল সংরক্ষণ করা হয়, তখন তার ভেতরের চাপ সেই দেয়ালের ওপর প্রয়োগ হয় যেখানে তা রাখা আছে। গোলাকার কূপে এই চাপ সমানভাবে বিতরণ হয়, ফলে কূপটি আরও টেকসই হয়। একই সঙ্গে, গোলাকার কুয়া তৈরি করা সহজ। সাধারণত এই কূপটি ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে খনন করা হয়, এবং গোলাকার আকারে ড্রিল করলে কাজটি অনেক সহজ হয়। তুলনামূলকভাবে, বর্গাকার কুয়া খনন করা কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কূপগুলো গোলাকার আকারেই তৈরি করা হয়। 

* কূপটি গোলাকার করার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, এই আকৃতির কূপ বহু বছর ধরে ভেঙে পড়ে না। পাশাপাশি, গোলাকার কূপ তৈরি করলে মাটি ডুবে বা বসে যাওয়ার সম্ভাবনাও অনেক কমে যায়, ফলে কূপটি দীর্ঘস্থায়ী ও স্থিতিশীল থাকে।

Read Entire Article