পোষ্য কোটা স্থগিত নয় বাতিল চান রাবি শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি স্থগিত নয় পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। এজন্য এই কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, রাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ধান্ত তারা মেনে নেনটি। তারা চান উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণা করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
এর আগে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে মুখে পোষ্য কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যায় প্রশাসন। রাত পৌনে ১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রোববার ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে নিযুক্ত সহ-উপাচার্যের (প্রশাসন) সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
এর প্রেক্ষিতে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তার গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তার বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তার বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তাঁর সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন। একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে আবারও বাধা দেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রোববার কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন।
রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রীও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। অবশেষে রাত ১টার দিকে বিক্ষোভের মুখে পোষ্য কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।