স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, সংসদীয় পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব দেব। এই উদ্দেশ্যে আমরা একটা একীভূত আইন করতে চাই। বর্তমানে পৌরসভারগুলোর আয় নেই, বেশিরভাগের বেতন বাকি আছে। তাই পৌরসভাগুলোকে বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করতে পারে সংস্কার কমিশনের প্রধান।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন একেক ধরনের। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চাই। এজন্য সংসদীয় পদ্ধতিতে নির্বাচন করার প্রস্তাব দেব। আমরা চাই জেলার আন্ডারে যতগুলো উপজেলা আছে, সেই উপজেলাগুলো থেকে মেম্বার নির্বাচিত হবে। এছাড়া একটি জেলা প্ল্যানিং নামে সংস্থা হবে। তারা সব উন্নয়ন প্ল্যান করবে এবং বাস্তবায়নের বিষয়ে দেখবে। এভাবে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।
- আরও পড়ুন:
সংস্কার কমিশনের খসড়া প্রস্তাব ঘিরে উত্তাল প্রশাসন
৯ সদস্যের সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন
পাঁচ সংস্কার কমিশনের সদস্য হলেন যারা
তিনি বলেন, ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত লোকাল গভর্নমেন্টের ইলেকশনে খরচ হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। সমন্বিতভাবে যদি এই নির্বাচন করা হয়, তাহলে খরচ ৬০০ কোটি টাকার নিচে নেমে আসত। সংসদসহ সব নির্বাচন একসাথে করা হলে মোট খরচ এক হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে। তাই আমাদের প্রস্তাব হবে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে ফেলা। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের মধ্যে আমরা আমাদের প্রস্তাব সরকারের কাছে দিতে চাই।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় কাজে এমপিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টা সংবিধান সংস্কার কমিশন দেখছে। তবে আমাদের ওখানে সাজেশন থাকবে এমপিরা যেন লোকাল গভর্নমেন্টের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ না রাখে। স্থানীয় সরকারের আয় বাড়াতে ট্যাক্স কীভাবে লোকাল গভর্নমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করা যায় সে বিষয়টাও দেখা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে আরও কার্যকর করতে জনগণের পরিমাণের ভিত্তিতে ওয়ার্ডগুলোকে ভাগ করার প্রস্তাব করব। এখন লোকাল গভর্মেন্ট বহু ইউনিটে ভাগ করা রয়েছে। ভবিষ্যতে এটাকে ওয়ান ইউনিট করা যায় কি না সে রকম প্রস্তাব নিয়ে ভাববো। এটা এখনই করা সম্ভব। এটা একটা সুদূরপ্রসারী চিন্তা। সবার জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে সেটাও চিন্তা করা হবে। মামলা কমাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা বাড়ানো ও সালিশ সিস্টেমকে আরও লিগালাইজ করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, একজন মেম্বার বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাদের অনেক চাঁদা দিতে হয়। সমাজ এটা তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থার পরিবর্তন কী হবে সেটা ঠিক করা হবে।
এমওএস/এমআরএম/জেআইএম