মাদারীপুরে ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে যে হত্যা করেছে তাকে দয়া দেখানোর কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ওই রায় বহাল রেখে অভিযুক্তের আপিল খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। একমাত্র আসামির আপিল ও জেল আপিল খারিজ এবং মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ) করে এ আদেশ দেন আদালত। সম্প্রতি এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। ৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি এস এম কুদ্দসু জামান।
রায়ে বলা হয়, ১৪ বছরের ছোট মেয়েকে (মাইনর) প্রকাশ্যে দিনের আলোতে হত্যা করা হয়েছে। পূর্ব পরিকল্পনামতো উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এমন অভিযুক্তকে দয়া দেখানোর যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ নেই। এছাড়া তার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করারও সুযোগ নেই। বিচারিক আদালত যথাযথভবে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন। ওই সাজা আইনগতভাবে সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য। তাই মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল খারিজ করা হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার নবগ্রাম গ্রামের নির্মল মণ্ডলের মেয়ে নিতু নবগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। প্রতিবেশী বীরেন মণ্ডলের ছেলে মিলন মণ্ডল প্রায়ই নিতুকে উত্ত্যক্ত করতো। ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিতু স্কুলে যাওয়ার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। মিলন তার পিছু নেয়। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নবগ্রাম উত্তরপাড়া ঠাকুরবাড়ি নামক স্থানে রাস্তায় নিতুকে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ পাশের নালায় ফেলে রাখে সে। এরপর পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসী মিলনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়।
ঘটনার দিন রাতে নিতুর বাবা নির্মল মণ্ডল বাদী হয়ে কালকিনির ডাসার থানায় মিলনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার একমাত্র আসামি মিলন মণ্ডলকে ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন আহমেদ মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে মিলন আপিল ও জেল আপিল করে। পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল খারিজ কর হয়।
এফএইচ/কেএসআর