প্রচণ্ড মাথাব্যথা দূর করতে যা করবেন

4 weeks ago 7

মাথাব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও যখন ব্যথা প্রচণ্ড হয়, তখন তা দৈনন্দিন কাজকর্মে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটায়। ঘন ঘন বা তীব্র মাথাব্যথা শুধু অস্বস্তিকর নয়, অনেক সময় এটি শরীরের আরও গুরুতর কোনো সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে। তবে কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে যা মেনে চললে আপনি মাথাব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন।

১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

ডিহাইড্রেশন বা শরীরে পানিশূন্যতা অনেক সময় মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হলে প্রথমেই একটি বড় গ্লাস পানি পান করুন এবং দিনভর পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার চেষ্টা করুন।

২. ঘুম বা বিশ্রাম নিন

অনিদ্রা, কম ঘুম বা অতিরিক্ত মানসিক চাপ মাথাব্যথার একটি বড় কারণ। যদি সম্ভব হয়, একটি অন্ধকার ও শান্ত ঘরে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিন। মাঝে মাঝে ৩০-৪৫ মিনিটের একটি “পাওয়ার ন্যাপ”-ই আপনাকে অনেকটা স্বস্তি দিতে পারে।

৩. ঠান্ডা বা গরম সেঁক দিন

মাথার পেছনের অংশে বা কপালে বরফের ঠান্ডা সেঁক দেওয়া মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আবার কিছু ক্ষেত্রে গরম পানির বোতল বা গরম তোয়ালে ব্যবহার করাও উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে যদি ব্যথা টেনশন হেডেক বা মাসল স্ট্রেইনের কারণে হয়ে থাকে।

৪. ক্যাফেইন সেবন করুন (মাঝেমধ্যে)

কম পরিমাণে চা বা কফিতে থাকা ক্যাফেইন মাথাব্যথা হালকা করতে পারে, কারণ এটি রক্তনালিগুলো সংকুচিত করতে সাহায্য করে। তবে বেশি ক্যাফেইন ঠিক উল্টো প্রভাব ফেলতে পারে, তাই এটি শুধু মাঝে মাঝে ব্যবহার করুন।

আরও পড়ুন : ঘরে বসে সহজ পদ্ধতিতে কিডনির পরীক্ষা করতে পারবেন

আরও পড়ুন : সময় না থাকলেও পুরুষদের জন্য কেন ব্যায়াম করা জরুরি

৫. তাজা বাতাস নিন ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন

অক্সিজেনের ঘাটতি অনেক সময় মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। খোলা জায়গায় গিয়ে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। কিছু স্লো ব্রিদিং বা মেডিটেশন অনুশীলন আপনাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেবে এবং ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করবে।

৬. স্ক্রিন টাইম কমান

দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার, মোবাইল বা টিভি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা চোখের চাপ তৈরি করে, যা মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। প্রতি ২০ মিনিটে একবার চোখ সরিয়ে দূরের দিকে তাকান, অথবা চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন।

৭. হালকা মালিশ করুন

মাথা, ঘাড় ও কাঁধের হালকা মালিশ রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং টেনশন হেডেক কমাতে কার্যকর। কেউ না থাকলে আপনি নিজেও আঙুল দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে কপাল ও স্ক্যাল্পে মালিশ করতে পারেন।

৮. প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন

পুদিনা পাতার তেল: কপালে বা কানের পেছনে পুদিনা পাতার তেল লাগালে তা ঠান্ডা অনুভূতি দেয় এবং মাথাব্যথা কমায়।

লবঙ্গের গুঁড়ো: কিছুটা লবঙ্গ গুঁড়ো করে কাপড়ে মুড়ে শ্বাস নিন – এটি অনেকের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক উপকার দিতে পারে।

আদা চা: আদা মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক, কারণ এটি প্রদাহ কমায়।

৯. ওষুধ গ্রহণ (ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী)

যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাথাব্যথা না কমে, তখন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?

- ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে (১ সপ্তাহ বা তার বেশি)

- মাথাব্যথার সঙ্গে বমি, ঝাপসা দৃষ্টি, দুর্বলতা বা কথা বলায় সমস্যা হলে

- ব্যথা হঠাৎ খুব তীব্রভাবে শুরু হলে

- ব্যথা প্রতিদিন ঘন ঘন হতে থাকলে

আরও পড়ুন : ত্বকের যেসব লক্ষণে বুঝবেন শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ছে

আরও পড়ুন : জীবনে বন্ধুত্ব কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

মাথাব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, তা অবহেলা করলে ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই ব্যথা তীব্র হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি এবং বারবার হলে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। জীবনযাত্রার কিছু ছোট পরিবর্তন ও সচেতনতা অনেক ক্ষেত্রেই আপনাকে মাথাব্যথা থেকে দূরে রাখতে পারে।

সতর্কতা: এই প্রতিবেদনটি একটি সাধারণ বিশ্লেষণ। 

Read Entire Article