নিয়মিত যারা বিমানে চড়েন তারা এয়ারপোর্ট, ফ্লাইট, এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন নিয়মকানুন সম্পর্কে জানেন। তবে যাদের এয়ারপোর্টে যাতায়াত নেই, প্রথমবারের মতো বিমান ভ্রমণ করছেন তারা অনেক নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। প্রথম বিমান ভ্রমণে অনেকে ভয় পেয়ে থাকেন। সঠিক কিছু নিয়ম জানা থাকলে বিমান ভ্রমণে ভয় পেতে হবে না। অভিজ্ঞতা হবে খুবই চমৎকার। আসুন জেনে নেওয়া যাক প্রথম বিমানে ভ্রমণের সময়ে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে-
কাগজপত্র হাত ব্যাগে রাখুন
বোর্ডিংপাস, আইডি, পাসপোর্টের মতো দরকারি কাগজপত্র লাগেজে রাখবেন না। বিমান ভ্রমণের সময় এগুলো অনেক বার দেখাতে হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বারবার লাগেজ খোলাটা বিরক্তকর। তাই দরকারি কাগজপত্রগুলো হ্যান্ডব্যাগে রাখুন।
সময়ের আগে বের হবেন
যানজটের কারণে বাসা থেকে হাতে সময়ে রেখে বের হলে সময়মতো বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারবেন। দেশের বাইরে ভ্রমণ করলে অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে এয়ারপোর্টে পৌঁছান। দেশের অভ্যন্তরে হলে ১ ঘণ্টাই যথেষ্ট। বিমান বন্দরে আপনাকে বিভিন্ন নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাই কিছু সময় লাগবে। এছাড়া বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স যাত্রীদের ফ্লাইটের দুই বা তিন ঘণ্টা আগে চেক-ইন করার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। তাই আগে পৌঁছালে সবকিছু সুন্দরভাবে শেষ করতে পারবেন।
এয়ারলাইন্সের লাগেজ প্যাক করার নিয়ম জেনে নিন
এয়ারলাইন্সের লাগেজ প্যাক করার নিয়ম আছে। লাগেজ বা বড় ব্যাগ কতটুকু ওজন নিতে পারবেন সেটা জেনে নিন। সেই অনুযায়ী আপনার লাগেজ প্যাক করা করুন। এয়ারলাইন্স ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। ওজন বেশি হলে লাগেজের জন্য ভাড়া দিতে হবে। এয়ারপোর্টের ভেতরেই ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। খরচ কমাতে চাইলে এয়ারলাইন্সের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাগ ঘুছিয়ে নিন। এছাড়া ফ্লাইট টিকিটের প্রিন্ট আউট নিয়ে করে নিয়ে যাবেন।
চেক ইনের নিয়ম
বিমানে ভ্রমণের পূর্বে প্রথমে বিমানবন্দর চেক-ইন করতে হয়। অর্থাৎ এয়ারপোর্টে ঢোকার পর আপনার ফ্লাইট খুলে দেওয়া হলে আপনি চেক ইন করবেন। চেক ইন করার পর বিমান বন্দর টার্মিনালে থাকা মনিটরের দিকে খেয়াল রাখুন।
বিমানবন্দরে থাকা নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের আপনার টিকেট, ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র ও পরিচয়পত্র দেখাতে হয়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনার সঙ্গে থাকা লাগেজ জমা দিতে হবে। সেখানে বোর্ডিং পাস ও লাগেজের ডকুমেন্টস হিসেবে কার্ড দেওয়া হবে। কার্ডটি অবশ্যই আপনার সঙ্গেই রাখুন।
বোর্ডিং
বোর্ডিংয়ের জন্য আপনাকে ডিপার্চার লাউঞ্জে যেতে হবে। এখানে শরীর থেকে শুরু করে আপনার সঙ্গে থাকা যাবতীয় সবকিছু চেক করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার হ্যান্ড ব্যাগ ও বোর্ডিং পাসে স্ট্যাম্প দিয়ে দিবে। যদি কোনকিছু সন্দেহজনক মনে হয় তাহলে ফ্লাইট বাতিল করে দিতে পারে।
আরামদায়ক পোশাক পরুন
ফ্লাইটের জন্য আরামদায়ক পোশাক হিসেবে ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন। দীর্ঘ যাত্রায় আরামদায়ক পোশাক পরা জরুরি কারণ এতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে পারবেন এবং ক্লান্তি কম আসবে। টাইট পোশাক বাদ দিয়ে লেগিংসের সাথে টি শার্ট স্লিপ-অন জুতা বা স্নিকার্স পরতে পারেন।
কার্ড সঙ্গে নিন
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় এমন ক্রেডিট কার্ড নিন। বহু দেশেই নগদ টাকা অনেক জায়গায় ব্যবহার করা সহজ হয় না। কার্ড ব্যবহার করা জরুরি।
ওয়াশরুমের ব্যবহার
বিমানে ওঠার আগেই টার্মিনাল থেকে ওয়াশরুম ব্যবহার করে নিন। বিমানে ওঠার পর আর আলাদাভাবে কোনো বিড়ম্বনা পোহাতে হবে না।
ব্যাগে যা রাখবেন না
>> যেকোনো আগ্নেয়াস্ত্র, নেইল কাটার, রশি, ব্লেড, পেন্সিল ব্যাটারি, বাটাল, ম্যাচ বাক্স, লাইটার, প্লাস, কাঁচি, ছুরি, সুই-সিরিঞ্জ, স্ক্রু ড্রাইভার, কাঁটা চামচ, সেভিং ফোম, ক্রিকেট ব্যাট, অ্যারোসল কিছুই রাখা যাবে না।
>> তরল জাতীয় জিনিস বহন করা নিষিদ্ধ। পানি, দুধ, তেল, বডি স্প্রে, শ্যম্পু নেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে ছোট শিশু থাকলে তার খাদ্য দুধ অনুমোদন সাপেক্ষে বহন করা যাবে।
>> নিরাপত্তার কারণে ফ্লাইটে সাধারণত নারিকেল নিয়ে বিমনে ভ্রমণ করতে দেওয়া হয় না। কাঁচা মাছ, মাংস সঙ্গে নিয়ে ভুলেও বিমানে ওঠা যাবে না। এগুলো নিয়ে ভ্রমণ করলে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হবে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
আরও পড়ুন:
এসএকেওয়াই/জেএস/এমএস