ভোটের আগে নিজস্ব কর্মকর্তাদের দিক-নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় ও মাঠ কর্মকর্তাদের নিয়ে হতে যাচ্ছে প্রথমবারের মতো ‘নির্বাচন কর্মকর্তা’ সম্মেলন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব উপস্থিত থাকবেন।
ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের জন্য ‘ইলেকশন কমিশন সার্ভিস’ চালুর বিষয়ে আইন সংশোধনে সরকারের সায় পাওয়ার মধ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে কর্মকর্তারা এই ‘মিলনমেলায়’ নিজেদের দাবি উপস্থাপনের পাশাপাশি ভোট প্রস্তুতির দিক-নির্দেশনা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন থেকে।
ইসি সচিবালয়ের পাশাপাশি দশ আঞ্চলিক, জেলা অফিস, পাঁচ শতাধিক থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসে পাঁচ সহস্রাধিক লোকবল রয়েছে। এনআইডি উইংয়ের রয়েছে সহস্রাধিক লোকবল। এরমধ্যে আট শতাধিক প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু থেকেই নির্বাচনী দায়িত্বের পাশাপাশি ইসি কর্মকর্তাদের এনআইডি সেবার কাজে সম্পৃক্ততা বাড়ে। তৎকালীন নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে আঞ্চলিক, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে সার্ভার স্টেশন নির্মাণ ও আধুনিকায়নের ব্যবস্থা নেয় সরকার।
এরইমধ্যে এনআইডি সেবা নিয়ে ‘টানাটানি’ ও ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদোন্নতিকে সামনে রেখে নানা দাবিতে সক্রিয় হন ইসি ও প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নির্বাচন কমিশন সার্ভিস গঠন, সংসদ নির্বাচনে কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া, পদসৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকসহ প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম ইসির হাতে রাখার দাবি জানিয়ে আসছে কর্মকর্তাদের সংগঠন।
বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিইসিওএ) আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন হচ্ছে। এতে সারাদেশের আট শতাধিক প্রথম শ্রেণির নিজস্ব কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে নিজেদের কথা যেমন উপস্থাপন করা হবে, তেমনি ভোটকে সামনে ইসির দিক-নির্দেশনাও পাবেন সবাই।’
তিনি আরও জানান, এনআইডি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন কর্মকর্তারা। শুরু থেকেই জনবলের ঘাটতি ছিল। এরইমধ্যে ভোটার বাড়তে থাকায় এনআইডি দেড়গুণ হয়েছে, কিন্তু সেই অনুপাতে জনবল বাড়েনি। উপজেলা-জেলা-আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ও সার্ভার স্টেশন নির্মাণে অবকাঠামো আধুনিকায়নের পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরিতে উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি।
৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব
নির্বাচন কমিশন ভোটার হালনাগাদ ও নির্বাচনী অবকাঠামো আধুনিকায়নে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিকল্পনা উন্নয়ন ও গবেষণা শাখা থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, প্রকল্পটি ২০২৪ -২০২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রকল্পটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুমোদন প্রক্রিয়াকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা পুরোপুরি সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত।
এ প্রকল্পের আওতায় একটি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, তিনটি জেলা নির্বাচন অফিস নির্মাণ, ৪৬টি উপজেলা নির্বাচন অফিস ও সার্ভার স্টেশন নির্মাণ এবং মেট্রোপলিটন থানার জন্য ১৬টি অফিস স্পেস কেনা হবে।
এমওএস/এসআর