ফেনীর মহিপালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে আলহাজ্ব কোব্বাদ আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করে। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে বিদ্যালয়ের মাঠে কর্মসূচি চালায়। এসময় ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ফাতিমা আক্তার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও দাবি শোনেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত চলাকালে প্রধান শিক্ষককে ছুটিতে পাঠিয়ে বিকল্পভাবে একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বছরের মাঝে হঠাৎ করে রুটিন পরিবর্তন করে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করা হচ্ছে। যে যে বিষয়ের শিক্ষক আছেন, তাদের দিয়ে সে বিষয়ে ক্লাস নেওয়া হয় না। দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়। ২০২৫ সালের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা নিয়ে মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালে ৯০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা করে মোট ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আদায় করা হলেও তার কোনো হিসাব নেই। বিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট বাণিজ্য করা হয়, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়। স্কুল ভবন রাতের বেলা ভাড়া দেওয়া হয়, পানির ট্যাংক প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমনকি লাইব্রেরির টেলিভিশনও তিনি নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, যোগ্য প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে, যারা স্থানীয় বাসিন্দা হবেন না। স্কুলের পাশে হাইওয়ে থানার একটি পরিত্যক্ত ভবনে উচ্ছৃঙ্খল তরুণরা অবস্থান নিয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে এবং মাদকের আসর বসায়। স্কুল মাঠ ও পরিবেশ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ারও দাবি জানান তারা।
অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক একেএম জহির উদ্দিন কচি বলেন, এনটিআরসি থেকে বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ১০ম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস নতুন শিক্ষককে দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আগের শিক্ষককে রাখতে চাচ্ছিল। এ নিয়েই আন্দোলন শুরু হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এসময় ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা কান্তা, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/এফএ/জিকেএস