পাবনা সদর উপজেলার চর তারাপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা ও গুলির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে। চাঁদা না দেওয়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি ভুক্তভোগী প্রবাসীর। এ ঘটনায় দুই বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ইউনিয়নের দাশপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম।
গুলিবিদ্ধরা হলেন চরতারাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ শফি (৪৫) ও বিএনপি নেতা টিক্কা খান (৪৭)। অন্য আহত ব্যক্তি ভুক্তভোগী প্রবাসী কাশেম বিশ্বাস (৫০)। তিনি ইউনিয়নের দাশপাড়া গ্রামের মৃত খবির উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন চরতারাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রামাণিক, সাহের মোল্লার ছেলে তনসের মোল্লা ও মজিবর বিশ্বাসের ছেলে শামীম বিশ্বাস।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে দাশপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে কাশেম বিশ্বাস, শেখ শফি ও টিক্কা খানসহ কয়েকজন বসে মিটিং করছিলেন। এসময় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম প্রামাণিকের নেতৃত্ব কয়েকজন যুবক মোটরসাইকেলে এসে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। এসময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় বিএনপি নেতা শেখ শফিসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শেখ শফির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী আবুল কাশেম বিশ্বাস বলেন, ‘যুবদলের সালাম প্রামাণিক প্রায়ই চাঁদার দাবিতে আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিতো। আমি চলতি মাসের ৫ তারিখে ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসি। আসার পর যুবদলের এসব নেতারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের কথা না শোনাতে আমার বাড়িতে এসে অতর্কিত হামলা করে। এসময় আমার সঙ্গে বসে থাকা দুজনকে গুলি করে। আমাকেও মারধর করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্রটি এলাকায় সালিশ বাণিজ্য, অবৈধ বালু ব্যবসা, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাই।’
তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত যুবদল নেতা আব্দুস সালাম প্রামাণিক। তিনি বলেন, আমি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা বলেন, ‘বিভিন্ন মারফতে জেনেছি ওই এলাকায় একটি ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি সংগঠনের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে। সংগঠনের কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাবনা সদর থানা ওসি আব্দুস সালাম বলেন, এ ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনাস্থলে গুলির দুটি খোসা পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এসআর/জিকেএস