প্রভাবমুক্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন বিচার বিভাগ নিশ্চিত করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আহ্বান করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। সোমবার (১২ আগস্ট) আপিল বিভাগের এক নম্বর এজলাস কক্ষে রেওয়াজ অনুযায়ী নব নিযুক্ত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে দেওয়া সংবর্ধনায় এমন মন্তব্য করেন তিনি। এসময় সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, বিগত দিনে বিচার বিভাগকে ক্রমান্বয়ে দলীয়করণ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে নির্বাহী বিভাগের আজ্ঞাবহ করে রাখার মাধ্যমে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
আমরা দেখেছি কীভাবে দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে ছাত্র জনতার যৌক্তিক ও অরাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বিচার বিভাগকে জনরোষের মধ্যে ফেলে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা আর এ ধরণের ন্যাক্কারজনক অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি আশা করি না।
প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্যে করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা রক্ষায় এবং আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে বিচার বিভাগের প্রতি নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশের গণমানুষের যে আশা আকাঙ্খা তার প্রতিফলন ঘটানো অত্যাবশ্যক। আপনি বিচার বিভাগের প্রভাবমুক্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন বিচার বিভাগ নিশ্চিত করবেন। নাগরিকের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। মামলা পরিচালনার দীর্ঘসূত্রতা দূর করবেন এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। সমাজের সব বৈষম্য দূর করার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থানেও সুপ্রিম কোর্ট বারের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। এই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুনভাবে দেশ গড়ার প্রত্যয় ও বিচার বিভাগকে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে বাংলাদেশ হাঁটছে সেই যাত্রায় আপনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে সবসময় আপনার পাশে পাবেন এই প্রতিজ্ঞা আমি করছি।
ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে গত ১০ আগস্ট প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান পদত্যাগ করেন। তারপর আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতি পদত্যাগ করেন। এরপর হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এমএস