বেক্সিমকোর নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লোপাটের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। প্রয়োজনে বিদেশে পলাতকদের পাসপোর্ট বাতিল করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেক্সিমকো ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অর্থলোপাটের সঙ্গে জড়িতদের আত্মসমর্পণ করে তদন্তের মুখোমুখি হওয়ারও আহ্বান জানান শ্রম উপদেষ্টা।
দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপ। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের নামেই ১১টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৮ হাজার কোটি টাকার ওপরে ঋণ নেওয়া হয়েছে। অস্তিত্ববিহীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া হয়েছে আরও ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ। সব মিলিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ রয়েছে বেক্সিমকোর।
উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকোর নামে ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া টাকা কোথায় গেছে সেটাও আমরা জানি না। এর সঙ্গে ১৩টি ব্যাংক জড়িত। প্রত্যেক ব্যাংক, সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- যারা এই টাকা দেওয়ার পেছনে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে এবং প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। গতকালও আমার তরফ থেকে এ বিষয়ে ব্যর্থহীন ঘোষণা গিয়েছে। এটি আমাদের মিটিং এর কার্যবিবরণীতেও লেখা আছে।
তিনি বলেন, এটা মনে করবেন না যে, বিদেশে চলে গেছেন। বিদেশে যারা গেছেন হয় তারা আসবেন, না হয় সেখানে আটকা পড়বেন। আমি জানি না কি হবে। আমি এরই মধ্যে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি। দরকার হলে তদন্তের পরে তাদের পাসপোর্ট বাতিল করতে হবে।
আমরা এভাবে লোকদের ছেড়ে দিতে পারি না। যারা এতগুলো শ্রমিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তারা তো শান-শওকতে এখানেও আছে বিদেশেও আছে।
শ্রম উপদেষ্টা আরও বলেন, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২০০৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। দেশে থাকেন বা বিদেশে থাকেন। যারা বিদেশে চলে গেছেন আমি তাদের অনুরোধ করবো, আপনারা দেশে এসে আত্মসমর্পণ করুন। আর যদি মনে করেন এভাবে চলে যাবে, আগামীতে কি ঘটবে সেটা আল্লাহ জানেন। তাই বলছি আত্মসমর্পণ করুন, তদন্তের মুখোমুখি হন, যদি নির্দোষ হন বিদেশেই থাকবেন।
তিনি বলেন, অনেকে সিটিজেনশিপ কিনেছেন। সিটিজেনশিপ হলেও বাংলাদেশে আইনে সেটা প্রযোজ্য হবে বলে আমি মনে করি। বিদেশে থাকবেন আর এখানে গণ্ডগোলের মধ্যে ফেলবেন সেটা হবে না।
আরএমএম/এমআইএইচএস/এমএস