প্রস্তাবনা নিয়ে ঢাকা কলেজ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ

2 hours ago 3

রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত কাঠামো নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।

তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই উদ্যোগের কোথাও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কলেজের শহীদ আ.ন.ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন তারা৷

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৮৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা কলেজ শুধু বাংলাদেশ নয়, উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি দেশের শিক্ষা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। বর্তমানে এখানে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। দীর্ঘ ১৮৪ বছরের ঐতিহ্য গড়ে তুলতে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের অবদানও অনস্বীকার্য।

২০১৭ সালে ঢাকা কলেজসহ রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এরপর থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের নানা সংকট দেখা দেয়। সেই প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সরকার সম্প্রতি সাত কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর তাদের এক প্রতিনিধিদল ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশের দাবি জানালেও, ইউজিসি আইনি সীমাবদ্ধতার কথা বলে তা নাকচ করে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা পাঁচটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় তুলে ধরেন, এগুলো হলো

১. ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে ‘স্কুল অব সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ঐতিহ্যবাহী নামফলক মুছে ফেলার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

২. সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক ও পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালানোর টাইম শেয়ারিং পরিকল্পনা অবাস্তব; এতে প্রশাসনিক জটিলতা এবং ভবিষ্যতে উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ বিলুপ্তির আশঙ্কা রয়েছে।

৩. একই ক্যাম্পাসে দ্বৈত কাঠামো চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের রাজনৈতিক কার্যক্রম উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ব্যাহত করতে পারে।

৪. স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিকানা প্রশ্নে অস্পষ্টতা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব এলে উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ প্রান্তিক হয়ে পড়তে পারে।

৫. নারী শিক্ষার্থী ভর্তির প্রসঙ্গকে সম্মান জানালেও, ঐতিহ্যের প্রশ্নে এটিকেও উদ্বেগ হিসেবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইউজিসির আশ্বাসের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। পুরো প্রক্রিয়াতেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব ছিল না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে স্বার্থবিরোধী ধারা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। একই সঙ্গে বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামোর যে কোনো পরিবর্তন বা সংকোচন উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষতি করলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলেও জানান তারা।

এনএস/এসএনআর/জিকেএস

Read Entire Article