অস্ত্রের চালানের বিষয়ে সেনাবাহিনীর অভিযান জোরদার করার পাশাপাশি নজরদারি আরও বাড়ানো হবে জানিয়ে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, আর্মি সদর দপ্তরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (জিওসি আর্টডক) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের এমন একটা প্রস্তুতি থাকতে হবে যাতে অস্ত্রের চালান ঢাকায় না আসতে পারে এবং কিছু যদি আসেও সেটা যেন আমরা ডিল করতে পারি।’
বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ২৬ অক্টোবর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গোয়েন্দা সংস্থা ও রেলওয়ে পুলিশের সহায়তায় রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে একটি বিশেষ অভিযান চালানো হয়। এসময় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি নির্দিষ্ট বগি তল্লাশি করে ৮টি বিদেশি পিস্তল, ১৬টি ম্যাগাজিন, ২৬ রাউন্ড অ্যামুনিশন, ২.৩৯ কেজি গান পাউডার এবং ২.২৩ কেজি প্লাস্টিক বিস্ফোরক উদ্ধার করে।
ঢাকায় আগ্নেয়াস্ত্র প্রবেশের মাধ্যমে নির্বাচনে নাশকতা হতে পারে কি-না জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, ‘সম্প্রতি যেখান থেকে ঢাকামুখী অস্ত্রের চালান ধরা পড়েছে এটা অবশ্যই আমাদের কনসার্ন করা উচিত। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত, তবে একই সঙ্গে অস্ত্র ধরা পড়েছে এটাও সাফল্য।’
অস্ত্রের চালানের বিষয়ে সেনাবাহিনীর অভিযান জোরদার করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। রাষ্ট্রের আমরাই একমাত্র সংস্থা না, আমি নিশ্চিত অন্যরাও একই কাজ করবে। আমাদের এমন একটা প্রস্তুতি থাকতে হবে যাতে অস্ত্রের চালান ঢাকায় না আসতে পারে এবং কিছু যদি আসেও সেটা যেন আমরা ডিল করতে পারি।
পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীলতার বিষয়ে প্রশ্নে মো. মাইনুর রহমান বলেন, খাগড়াছড়িতে কয়েকদিন আগে কি হয়েছে আপনারা জানেন, তারও আগে রাঙ্গামাটিতে কি হয়েছে জানেন, বান্দরবানে কুকি-চিন আপাতত একটু লো-ওয়েবে চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী অস্ত্র আসলে বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর যে আবেগের প্রকাশ ঘটানো যায়নি, যে অনুভূতিগুলো বলা যায়নি সেটার বহিঃপ্রকাশতো আছে। রাষ্ট্রযন্ত্রের অনেক মেশিনারিজ তখন কিছুটা হলেও অকার্যকর হয়ে পড়েছিল; এটা বাস্তবতা। এরকম একটা ব্যতিক্রমী সময়ে পারফেক্ট আউটকাম আশা করা যায় না।
‘সেনাবাহিনী এই সময়ের মধ্যে কুমিল্লা-নোয়াখালীর বন্যা থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাবি-দাওয়া, বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে অস্থিতিশীলতা, পুলিশ স্টেশন রক্ষা করা এবং ট্রাফিক দায়িত্ব পালন করা থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই যে সীমিত জনবল দিয়ে সেনাবাহিনী করেনি। ৪০ বা ৫০ হাজার সেনা সদস্যের প্রাথমিক কাজ এটা না। তারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করে গেছে। এই সময়ে সেনাবাহিনী না থাকলে দেশের পরিস্থিতি কতটা অবনতি হতো সেটা ধারণাও করা যেত না’,—যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পার্শ্ববর্তী দেশে সামরিক প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে লে. জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, এটি নিয়ে আমাদের চিন্তার কারণ নেই। সামরিক প্রশিক্ষণ একটা দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এটা যে কোনো রাষ্ট্রই করতে পারে। যে জায়গার কথা বলছেন সেটার প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে অবগত শুধু বাংলাদেশ না, আরও অন্য রাষ্ট্রকে বিবেচনা করে তাদের (প্রতিবেশী দেশ) চিন্তা করতে হয়। ওখানে তাদের সঙ্গে আরও দুটি দেশের ইস্যু রয়েছে। আমরাও প্রয়োজন হলে মহড়া বা অনুশীলন করি। বিষয়টি সেভাবে দেখলেই ভালো হয়।
টিটি/এমএমকে/এএসএম

10 hours ago
6









English (US) ·