প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন ট্রাম্প, গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিল রাশিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে সোমবার (২০ জানুয়ারি) অনুষ্ঠানিকভাবে ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মসনদে বসলেন তিনি। এরপরই রাশিয়ার পক্ষ থেকে ট্রাম্পের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা আসে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দপ্তর ও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক দুটি বার্তা প্রচার করা হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ নেটওয়ার্ক আরটি ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানায়।
সোমবার দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাচ্ছে রাশিয়া। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ পুনরায় শুরু করার জন্য তার ঘোষিত ইচ্ছাকে স্বাগত জানাচ্ছে মস্কো।
পুতিন বলেন, আমরা নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার দলের সদস্যদের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে বক্তব্য শুনছি; যা বিদায়ী প্রশাসন বন্ধ করে দিয়েছিল। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ রোধে সবকিছু করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ট্রাম্পে বক্তব্যও আমরা শুনতে পাচ্ছি। অবশ্যই, আমরা এই ধরনের মনোভাবকে স্বাগত জানাই এবং নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানাই।
অপরদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, নতুন মার্কিন প্রশাসনের নীতিগুলো মূলত বিশ্বব্যবস্থা নির্ধারণ করবে। মস্কো ওয়াশিংটনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য উন্মুক্ত। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একই বৈঠকে সের্গেই এ মন্তব্য করেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউক্রেন সংঘাতসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর প্রভাব নিয়ে জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে। অতএব, অনেক কিছু নির্ভর করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। প্রথমত, ইউরোপীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের এশীয় মিত্র অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড সম্পূর্ণরূপে হোয়াইট হাউসের অবস্থানের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই অর্থে তারা বর্তমান মার্কিন নেতৃত্বের অবস্থান চূড়ান্ত আকারে কী হবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি তার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে মিলবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
প্রসঙ্গত, ১৮৯০ সালের পর ট্রাম্পই প্রথম ব্যক্তি যিনি একটি নির্বাচনে পরাজয়ের পর আবারও প্রেসিডেন্ট হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শপথ গ্রহণ করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল রোটুন্ডায় তার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে হাজির ছিলেন বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্র নেতারাও।
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন উপস্থিত ছিলেন।অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প, ছোট ছেলে ব্যারন ট্রাম্প, টিফানি ট্রাম্প, লারা ট্রাম্প, এরিক ট্রাম্প, জ্যারেড কুশনার, ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র।
এ ছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই, স্পেসএক্স ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক, গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই, মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ, আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসসহ বিশ্বের বহু প্রভাবশালী শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।