প্লট দুর্নীতি: হাসিনা-জয়-পুতুলসহ ২২ জনের কে কোন সাজা পেলেন

ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিনটি পৃথক মামলায় এ রায় ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা তিন মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে সাত বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি মামলায় এক লাখ টাকা করে মোট তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১৮ মাসের কারাভোগ করতে হবে তাকে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে ছয় মাসের অতিরিক্ত কারাভোগ করতে হবে। একইভাবে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও এক মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিনি ছ

প্লট দুর্নীতি: হাসিনা-জয়-পুতুলসহ ২২ জনের কে কোন সাজা পেলেন

ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে করা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি বিশেষ আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিনটি পৃথক মামলায় এ রায় ঘোষণা করেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা তিন মামলায় অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাকে সাত বছর করে মোট ২১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি মামলায় এক লাখ টাকা করে মোট তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ১৮ মাসের কারাভোগ করতে হবে তাকে।

শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এক মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাকে ছয় মাসের অতিরিক্ত কারাভোগ করতে হবে। একইভাবে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও এক মামলায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তিনি ছয় মাস অতিরিক্ত সাজা পাবেন।

এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিনকে পৃথক দুই মামলায় ছয় বছর করে মোট ১২ বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ তিন মামলায় ছয় বছর করে ১৮ বছরের কারাদণ্ড ও তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। একই মেয়াদে এবং সমপরিমাণ জরিমানা করা হয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনকেও।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার তিন মামলায় এক বছর করে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞাকে তিন মামলায় পাঁচ বছর করে ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী তিন মামলায় তিন বছর করে নয় বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানায় দণ্ডিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন
প্লট দুর্নীতির ৩ মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড 
প্লট দুর্নীতি মামলায় মা-ছেলে-মেয়ের কারাদণ্ড 

রাজউকের সাবেক সদস্য কবির আল আসাদ এক মামলায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ড পেয়েছেন। সাবেক সদস্য তন্ময় দাস এবং মো. নুরুল ইসলাম পৃথক দুই মামলায় তিন বছর করে ছয় বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। রাজউকের সাবেক পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক কামরুল ইসলাম উভয়ই এক মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।

রাজউকের সাবেক উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান এবং হাবিবুর রহমানও এক মামলায় এক বছর করে কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানায় দণ্ডিত হয়েছেন। একই পদমর্যাদার নায়েব আলী শরীফ দুই মামলায় এক বছর করে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানায় দণ্ডিত হয়েছেন। সাবেক সদস্য খুরশীদ আলম তিন মামলায় এক বছর করে তিন বছরের কারাদণ্ড ও মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ডের আদেশ পেয়েছেন। তিনি মামলাটিতে একমাত্র আত্মসমর্পণ করা আসামি।

তবে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার তিন মামলার সবকয়টি থেকে খালাস পেয়েছেন।

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে গত জানুয়ারিতে দুদক তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করে। তিন মামলার তদন্ত শেষে চার্জশিট জমা পড়ে ১০ মার্চ। পরে ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলাগুলোতে মোট ৮০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।

দীর্ঘ শুনানি, সাক্ষ্য-প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ বৃহস্পতিবার বহুল আলোচিত এই তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

এমডিএএ/কেএসআর

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow