প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে এসএমই ফাউন্ডেশন ও জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা-ইউনিডো, বাংলাদেশের উদ্যোগে শুরু হচ্ছে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত উদ্যোক্তাদের মোট ৫৪ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সম্মেলন কক্ষে ‘প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এসএমই ফাউন্ডেশন ও ইউনিডো, বাংলাদেশের উদ্যোগে ওই কাজে সহায়তা করবে নরওয়ে দূতাবাস।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে সারাদেশ থেকে আবেদনকারী উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে নারী, শিক্ষার্থী, গবেষক, বেসরকারি সংস্থা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতের উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দিয়ে ২৫ জনকে নির্বাচিত করে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
নির্বাচিত ২৫ জন উদ্যোক্তা মেন্টরশিপ প্রশিক্ষণ শেষে ইউনিডো, বাংলাদেশ, অর্থ, পরিকল্পনা, শিল্প, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ডের কাছে তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপন শেষে ৭ জন উদ্যোক্তাকে ২ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।
এরপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৫ উদ্যোক্তাকে ৩ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের ২০২০ সালের প্রতিবেদন বলছে, দেশে বছরে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে পুনর্ব্যবহার হয় শতকরা মাত্র ৩১ ভাগ। শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয় সারাদেশের শতকরা ১০ ভাগ বা ৬৪৬ টন। পুনর্ব্যবহার হয় শতকরা মাত্র ৩৭ ভাগ।
সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার লক্ষ্য ৯ (শিল্প, উদ্ভাবন ও অবকাঠামো) এবং ১২ (দায়িত্বশীল ভোগ ও উৎপাদন) বাস্তবায়ন সহজতর হবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদশেকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন অনুঘটকের ভূমিকা রাখছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসএমই ফাউন্ডেশন এসএমই খাতের উন্নয়নে পলিসি অ্যাডভোকেসি, উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি উন্নয়ন ও লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মান উন্নয়ন, ক্রেডিট হোলসেলিং, পণ্য বাজারজাতকরণ, পণ্য বিপণনে পরামর্শ ও সহায়তা, ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ, বিজনেস সাপোর্ট সার্ভিস, নারী-উদ্যোক্তা উন্নয়নে কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান। এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দ শাহজাহান আহমেদ এবং জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইউনিডো, বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকিউজ্জামান এবং বিশেষজ্ঞ মো. মাহবুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজিম হাসান সাত্তার। উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা খান, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং মো. আব্দুস সালাম সরদার।
এমএমএ/এমআইএইচএস