ফরিদপুরের দুইটি আসন পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে রিট

3 hours ago 2

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন (চরভদ্রাসন এবং সদরপুর উপজেলা) এবং ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন (ভাঙ্গা উপজেলা) পুনর্বহাল চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের অনুমতি নিয়ে রিটটি ফাইল করা হয় বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী পল্লব।

ফরিদপুর ৪ সংসদীয় আসনের আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং ফরিদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, দলটির অঙ্গসংগঠন জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম রেজা, আইনজীবী এম্পাহাত খান, ব্যবসায়ী এম এম শহিদুল ইসলাম শাহীন, চরভদ্রাসন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাজাহান শিকদারসহ সদরপুর এবং চরভদ্রাসনের ১৬ জন ভোটারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব রিটটি দায়ের করেন।

এর আগে নির্বাচন কমিশন আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেই প্রজ্ঞাপনে চরভদ্রাসন এবং সদরপুর তথা ভাঙ্গা উপজেলার একটি অংশকে নিয়ে ফরিদপুর ৪ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করে। একই সঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগি এবং হামিরদি ইউনিয়ন দুটিকে বিচ্ছিন্ন করে পার্শ্ববর্তী সংসদীয় আসন ফরিদপুর-২ এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।

১৯৭০ সালের নির্বাচন থেকে ফরিদপুর ৪ সংসদীয় আসনটি চরভদ্রাসন এবং সদরপুর উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এবং ভাঙ্গা উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর ৫ সংসদীয় আসন নির্ধারিত ছিল। ২০০৮ সালে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশে দুটি সংসদীয় আসনকে একত্রিত করে ফরিদপুর ৪ সংসদীয় আসন গঠন করা হয়। অত্র রিট পিটিশনের আবেদনকারীরা ২০০৮ সালের আগের মতো ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫ সংসদীয় আসন পুনর্গঠনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাদের আবেদন সঠিকভাবে আইনি বিচার বিশ্লেষণ না করে আগের মতো চরভদ্রাসন, সদরপুর এবং ভাঙ্গা উপজেলার (আলগি এবং হামিরদি ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) একটি আসন ফরিদপুর-৪ বহাল রেখেই প্রজ্ঞাপন জারি করে।

আরও পড়ুন:

রিটে নির্বাচন কমিশনের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে উক্ত পিটিশন দায়ের করা হয়। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণী আইন ২০২১ এর ৭ ধারা এবং বাংলাদেশ সংবিধানের ১২৫ (ক) অনুচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালে সংশ্লিষ্ট আইন ভঙ্গ করে দুটি সংসদীয় আসন (ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫) একত্রিত করে তিনটি উপজেলার সমন্বয়ে একটি আসনে (ফরিদপুর ৪) রূপান্তরিত করে। ইতিপূর্বে রিট আবেদনকারীরা আগের মতো ফরিদপুর-৪ এবং ফরিদপুর-৫ দুটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসন পুনর্বহালের জন্য আবেদন করলে নির্বাচন কমিশন সেই আবেদন নামঞ্জুর করে এবং অবৈধভাবে ভাঙ্গা উপজেলা থেকে দুটি ইউনিয়ন পরিষদ বিচ্ছিন্ন করে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর-২ সংসদীয় আসনের সঙ্গে সংযুক্ত করে। যা ২০২১ সালের সীমানা নির্ধারণী আইনের ৬ ধারার স্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু নির্বাচনী আইনে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিকারের ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে, সেহেতু সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণী আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা এবং সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কারণ, একজন নাগরিককে আইনি প্রতিকার থেকে এবং সাংবিধানিক অধিকার থেকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করার সুযোগ নেই।

আগামী বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের শুনানি হতে পারে বলেও জানান তিনি।

এফএইচ/এনএইচআর/এমএস

Read Entire Article