ফিলিস্তিনে শিক্ষার্থী গণহত্যার ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ
এক বছরের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। অঞ্চলটিতে হামলায় প্রতিনিয়ত নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। এদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বর্বরতা নিয়ে এবার প্রকাশিত আরও একটি পরিসংখ্যান আঁতকে উঠার মতো।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। শুধু হত্যাই নয়, অনেককে ধরে নিয়ে গেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। তাদের কারাগারে আটকে রেখে করা হচ্ছে নির্যাতন।
মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি ছাত্র নিহত হয়েছেন। গাজা উপত্যকা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় তারা মারা গেছেন। দাপ্তরিক সংখ্যাটি ১২ হাজার ৭৯৯ জন। তবে অনেক মরদেহ উদ্ধার সম্ভব না হওয়ায় প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। নিহত ছাড়াও অন্তত ২০ হাজার ৯৪২ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, বেশিরভাগ হতাহতের সংখ্যা গাজায়। তবে পশ্চিম তীরেও অনেকে নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া অন্তত ৫৯৮ শিক্ষক ও স্কুল প্রশাসক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৮০১ জন।
পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ৫৩৮ ছাত্র এবং ১৫৮ শিক্ষক ও প্রশাসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার বিষয়ে গাজার পরিসংখ্যান অস্পষ্ট। যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের ভবিষ্যৎও অজানা।
আরও বলা হয়েছে, ৪২৫টি সরকারি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের ভবন বোমা হামলা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থার সাথে অধিভুক্ত ৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বোমাবর্ষণ করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটির ধ্বংসাবশেষেই কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীও প্রতিরোধের মুখে পড়ছে। সর্বশেষ দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় স্বাধীনতাকামীদের সঙ্গে যুদ্ধে ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন কোম্পানি কমান্ডার। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বরাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় এক যুদ্ধে তাদের দুই সেনা নিহত হয়েছে। এদের একজন রিজার্ভ ফোর্সের মেজর মোশিকো ম্যাক্সিম রোজেনওয়াল্ড (৩৫)। তিনি নাহাল ব্রিগেডের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নে কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপরজন সৈনিক। তবে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এ দুজন কীভাবে নিহত হলেন- তা জানায়নি সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে নিহত ইসরায়েলি সৈন্যের মোট সংখ্যা ৮১৭ জনে পৌঁছাল।