অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নেদারল্যান্ডসের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বোরিস ভ্যান বমেলের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, আসন্ন সাধারণ নির্বাচন, বাণিজ্য ও কৃষি খাত এবং চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের বিষয়গুলো বিশেষভাবে আলোচিত হয়।
বোরিস ভ্যান বমেল বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রতি নেদারল্যান্ডসের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল এ সপ্তাহেই বাংলাদেশে পৌঁছাবে এবং নেদারল্যান্ডস এই মিশনকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন
- কিছু মহল এখনো নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে: প্রধান উপদেষ্টা
- নিউইয়র্ক সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী ফখরুল-তাহেরসহ ৪ রাজনীতিবিদ
পানি ব্যবস্থাপনায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিম্নাঞ্চল রক্ষায় নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে উপকৃত হচ্ছে বলে ড. ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু গড়ে তুলতে পারি এবং একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারি।
রাষ্ট্রদূত ভ্যান বমেল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন অর্জনগুলোতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, বিশেষ করে সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণ খাতে উদ্ভাবনের বিষয়ে।
ড. ইউনূস কক্সবাজারে অবস্থানরত প্রায় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সহায়তায় নেদারল্যান্ডসের বাড়তি সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, অর্থসংকটের কারণে চলমান মানবিক কর্মকাণ্ড ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
তিনি রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন যে, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, এ সম্মেলন আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করবে এবং শরণার্থী শিবিরে মানবিক সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
রাষ্ট্রদূত সংকটের জরুরি সমাধানের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি আরও আন্তর্জাতিক মনোযোগের দাবিদার। তবে বর্তমানে বৈশ্বিক মনোযোগ অন্য ভূ-রাজনৈতিক সংকটে বিভ্রান্ত হয়েছে।
এসময় সরকারের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
এমইউ/এমকেআর/জিকেএস