বিএনপির কুমিল্লা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দেশে এখন নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। তাই আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপি এই সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা উল্লেখ করে সেলিম ভুইয়া বলেন, বিএনপিকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করলে নেতাকর্মীরা তা মেনে নেবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে দেশে আবারও শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর মাদ্রাসা মাঠে উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চরম উত্তেজনা আর একাংশের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ এবং প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশকে সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব এ কে এম মুসাকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর, কিন্তু দুপক্ষের রেষারেষির কারণে ১৪৪ ধারা জারি হলে তিনি আর আসেননি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম ভিপি মুসার সঞ্চালনায় সম্মেলনে অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, কুমিল্লা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম। উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী, বেলাল সরকার তুহিন, আসাদুজ্জামান শাহীন প্রমুখ।
এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা রঙ-বেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে চলে আসতে থাকে। সম্মেলনটি বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের এসএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একইস্থানে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনবিরোধী পক্ষ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজনের ঘোষণা দেয়। এ অবস্থায় পৌর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় সেখান থেকে সরিয়ে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের রাধানগর মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলন। এ নিয়েও উত্তেজনা ছিল উপজেলায়। বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরের অদূরে কৃষ্ণনগর এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে সম্মেলন বিরোধীরা।
এর আগে বাঞ্ছারামপুরে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গত সোমবার দুপুরে বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে ৫টি মোটরসাইকেলে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ কমপক্ষে ৩০টি দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। আহতদের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক ছয়জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।